‘তুমি আমাদের গর্ব’

জহির উদ্দিন মিশু, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ মার্চ ২০১৭, ১১:০৭ | প্রকাশিত : ২৯ মার্চ ২০১৭, ১০:২৬
ছবি: যন্ত্রণা নিয়েও মাঠে লড়াকু মাশরাফি।

তাঁকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। কত কাব্য, কত কথা কতই-না ভালোবাসা তাঁর জন্য ভক্তদের। হাজারটা শুভেচ্ছা তিনি পেতেই পারেন। শতটা স্যালুট তাঁর জন্য কমই হয়! কারণ তিনি যে উপলক্ষ রেখে গেছেন, সেটা বুক ফুলিয়ে গর্ব করার মতোই। বলছিলাম বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম মহানায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার কথা।

মাশরাফি আর বাংলাদেশ ক্রিকেট। যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তাঁর বীরত্বে একের পর এক মুগ্ধ রথী-মহারথীরা। এইতো গতকাল ডাম্বুলায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নড়বড়ে পা নিয়েও মাঠে দেখা যায় মাশরাফিকে। ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর ফ্রেমে বন্দী সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। তাতেই উঠে ম্যাশ বন্ধনার ঝড়।

কেউ কেউ বলছেন ‘তুমি আমাদের গর্ব, অহংকার। তোমার অবদান বাংলাদেশ ক্রিকেট কখনও ভুলবে না।’ কেউ আবার মাশরাফিকে নিয়ে লিখছেন লাইনের পর লাইন। প্রিয় তারকার এমন ছবি দেখে কারো চোখে জল। কোনো কোনো সমর্থক মাশরাফিকে নক্ষত্র, বীর, যোদ্ধা এমন অসংখ্য বিশেষণে বিশেষায়িত করছেন।

ভক্তদের এমন ভালোবাসার যোগ্যতাও রাখেন মাশরাফি। তা-না হলে বহুবার ইনজুরির ছোবল খেয়েও দেশের জন্য, দেশের ক্রিকেট পাগল জনতার জন্য ২২ গজ ছাড়েননি মাশরাফি। ২০০১ থেকে ২০১৭। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রায় ১৬টি বছরে ঠিক কতবার যে ইনজুরিতে পড়েছেন সেটি হয়তো মাশরাফিকেও গুনে বলতে হবে। দীর্ঘ এই যাত্রা পথে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৮ বার ইনজুরির কবলে পড়তে হয় টাইগার কাপ্তানকে।

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ইনজুরি নামক যন্ত্রণাটা বয়ে বেড়াচ্ছেন মাশরাফি। ২০০২ সালে প্রথম ইনজুরিতে পড়েছিলেন মাশরাফি। যে কারণে ১৪ মাস মাঠের বাইরে থাকতে হয় তাঁকে। সেই প্রথম লিগামেন্ট ছেঁড়া। পরের বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে ছিঁড়ে ডান পায়ের লিগামেন্ট। ফলে আরও ৯ মাস মাঠের বাইরে নীরব দর্শক হয়ে থাকতে হয়েছিল মাশরাফিকে।

এরপর ২০১১ সালে দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্বকাপ। কিন্তু ঘরের মাঠে মাশরাফিকে বিশ্বকাপ খেলতে দেয়নি হাঁটুর চোট। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে হাতের কব্জিতে চিড় ধরায় ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ মাঠের বাইরে ছিটকে যান মাশরাফি। নিজের বলে ফিল্ডিং করতে গিয়ে হাতের তালুতে বল লাগে সজোরে। ওই ওভারের শেষ চারটি বল করতে পারেননি মাশরাফি। তাঁর অসমাপ্ত ওভার শেষ করেন মোসাদ্দেক হোসেন।

তবুও মাশরাফিকে থামাতে পারেনি ইনজুরি। শ্রীলঙ্কা সফরকে সামনে রেখে দিনরাত পরিশ্রম করে উঠে দাঁড়িয়েছেন। লড়াইয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। মাঠে নেমেও ব্যাটে-বলে দেখান সেই চেনা নৈপুণ্য। দলের সবচেয়ে সিনিয়র খেলোয়াড় হয়েও মাঠের ফিল্ডিংয়ে তিনি কুড়িয়েছে সবার বাহবা। পেয়েছেন সতীর্থদের বুকভরা ভালোবাসা।

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে রাঙাচ্ছেন মাশরাফি। হয় ব্যাটে না হয় বলে। দেশের জার্সিতে ৩৬টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন মাশরাফি। নিয়েছেন ৭৮টি উইকেট। গড় ৪১.৫২, ইকনোমি রেট ৩.২৪ করে। রান করেছেন ৭৯৭। এছাড়া অদ্যাবধি ওয়ানডে খেলেছেন ১৭১ ম্যাচ। উইকেট শিকার করেছেন ২২২টি। সেরা বোলিং ফিগার ২৬ রানে ৬ উইকেট। রান করেছেন ১৫৪০। আর টি-টুয়েন্টিতে ৫২ ম্যাচ থেকে নিয়েছেন ৩৯টি। রান ৩৬৮।

যার জীবনে অজুহাত বলে কিছু নেই...

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :