কুমিল্লায় নতুন ইসির পরীক্ষা আজ
রাত পোহালেই শুরু হবে কুমিল্লা নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে কেন্দ্রে কেন্দ্রে। নতুন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে এটি প্রথম নির্বাচন বলে একে তাদের জন্য একটি পরীক্ষা বলে দেখছেন রাজনৈতিক মহল। তবে সুষ্ঠু ভোটের সর্বোচ্চ আশ্বাস দিয়েছে ইসি।
কুমিল্লা সিটির নির্বাচন প্রচারণা যখন তুঙ্গে তখন জঙ্গি আলোচনা দেশজুড়ে। সীতাকুণ্ড থেকে সিলেট-মৌলভীবাজার হয়ে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান এখন খোদ কুমিল্লা সিটিতে। নগরীর কোটবাড়ির গন্ধমতিতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে পুলিশ একটি বাড়ি বিকেল থেকে ঘিরে রেখেছে। তবে ভোটের আগে সেখানে অভিযান না-ও চলতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, বুধবার সকাল আটটায় ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৩টি ভোটকেন্দ্রে ভোট নেয়া শুরু হবে। চলবে একটানা বিকাল চারটা পর্যন্ত। চারজন মেয়র, ১০৪ জন কাউন্সিলর ও ৪০ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নির্বাচনে। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২ হাজার ৩২৯ জন আর নারী ভোটার ১ লাখ ৫ হাজার ৫৫ জন।
২০১১ সালে কুমিল্লা সিটির প্রথম ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপির নেতা মনিরুল হক সাক্কু। তবে বিএনপি নির্বাচনে না আসায় তিনি স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করেন। সেবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা আফজল খান। এবার দলীয় প্রতীকে প্রথম নির্বাচনে সাক্কুর প্রতিদ্বন্দ্বী আফজল খানের মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা।
এখানে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে সিটি নির্বাচন হচ্ছে বলে এক উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে নগরে। তবে বুধবার বিকেলে কোটবাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে পুলিশ একটি বাড়ি ঘিরে ফেলার খবরে নির্বাচনী আমেজ কিছুটা হোঁচট খায়। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের মধ্যে সব আলোচনা কেন্দ্রীভূত হয় এই বাড়ি ঘিরে।
মঙ্গলবার মধ্য রাতে শেষ হয়েছে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের ১৪ দিনের প্রচারণা। ভোটগ্রহণ সামনে রেখে কুমিল্লায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এই নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিবউদ্দিন মন্ডল জানান, নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন সে জন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।
নির্বাচন কমিশন থেকে জানা যায়, ভোটারদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং নির্বিঘ্নে ভোট প্রদানের লক্ষ্যে ৩৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং নয়জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ২৭ জন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে এক হাজার ৬৭৬ জন পুলিশ সদস্য, এক হাজার ২৩৬ জন আনসার ভোটকেন্দ্রগুলোতে দায়িত্ব পালন কেরবেন। এ ছাড়া ৩২২ জন র্যাব ও ৪৮০ জন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ইসির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ২ মার্চ। বাছাই হয় ৫ ও ৬ মার্চ। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ১৪ মার্চ।
(ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/এসও/মোআ)
মন্তব্য করুন