কুমিল্লায় ঘটনাবহুল ভোট শেষ, চলছে গণনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩০ মার্চ ২০১৭, ১৬:৩৩ | প্রকাশিত : ৩০ মার্চ ২০১৭, ১৬:২২

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ করা হয়। এখন চলছে ভোট গণনা। সন্ধ্যা নাগাদ ফলাফল আসতে শুরু করবে। রাতেই জানা যাবে কে হচ্ছেন কুমিল্লার পরবর্তী নগরপিতা।

ভোট চলাকালে বড়ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও বিক্ষিপ্ত অনিয়ম, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও অভিযোগের বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।

তবে ভোটগ্রহণ ছিল স্বতস্ফূর্ত। সাড়ে ছয় ঘণ্টায় ৬০ ভাগের বেশি ভোট পড়েছে। পুরো সময়ে প্রায় ৮০ ভাগের কাছাকাছি ভোট পড়বে বলে আশা করছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল। সাম্প্রতিক সময়ে কোনো নির্বাচনে এত অধিক হারে ভোট পড়েনি।

ভোটের আগের দিন কুমিল্লায় একটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই আস্তানাটি এখনো ঘিরে রেখেছে তারা। তবে এর কোনো প্রভাব আশপাশের এলাকার ভোটকেন্দ্রগুলোতে পড়েনি।

প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে। সকাল আটটা থেকে ১০৩ কেন্দ্রে ভোট শুরু হয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর একটি কেন্দ্রে এবং জাল ভোট দেয়ার চেষ্টার অভিযোগে আরও একটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা। এর বাইরে আরও তিন থেকে পাঁচটি কেন্দ্রে সাময়িক উত্তেজনার খবর জেনেছেন আমাদের প্রতিবেদকেরা।

এদিকে সকালেই বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু তিনটি কেন্দ্রে তার এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন। এছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও দুই দফা সংবাদ সম্মেলনে ব্যাপক কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন।

তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলছেন, যেখানেই কোনো ঘটনা ঘটেছে সেখানেই তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছেন।

জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের চৌরা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্র এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর ২১নং ওয়ার্ডের সরকারি সিটি কলেজের পুরুষ কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করে দেন। একটি কেন্দ্রের পাশ থেকে ১০টি ককটেলও উদ্ধার করা হয়।

এর বাইরে রাজপারা, নেওরায় ৭৪, ৭৫ কেন্দ্র, সুজানগরে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে মাতৃসদন হাসপাতাল কেন্দ্র এবং ৭ নং ওয়ার্ডের ইসহাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও দুই পক্ষের উত্তেজনা দেখা গেছে দুপুরের পর থেকে। বাকি ৯৭ কেন্দ্র নিয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

তবে সার্বিকভাবে ভোটকে শান্তিপূর্ণ বলেছেন সরকারি দলের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা। তিনি বলেছেন, বিএনপি যে কেন্দ্রগুলো নিয়ে অভিযোগ করেছে সেগুলো সুনির্দিষ্ট না।

সকাল থেকেই প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের বাইরেই ভোটারদের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা যায়। বেলা সাড়ে ১১টার সময়ই ভোট প্রদানের হার বেশিরভাগ কেন্দ্রেই ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ হয়ে যায় বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা।

বাংলাদেশে সব সময় ভোট সকালে এবং বিকালে ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকে। সবচেয়ে কম থাকে দুপুরের দিকে। কুমিল্লাতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। দুপুরের দিকে কেন্দ্রগুলোতে ভিড় কিছুটা কম দেখা গেলেও বেলা দুইটার পর আবারও ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে।

বেলা পৌনে তিনটায় রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডলের সঙ্গে কথা হয় ঢাকাটাইমসের। এ সময় তিনি জানান, বেশিরভাগ কেন্দ্রেই ভোট প্রদানের হার ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।

সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় সরকার বা সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে এত ভোটার উপস্থিতি দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে ফাঁকা হওয়া সংসদীয় আসন সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) এর উপনির্বাচনেও ভোটারদের তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ আসনে উপনির্বাচনেও ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬০ শতাংশের কম। গত ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ভোটার উপস্থিতি ছিল ৭০ শতাংশের কম।

(ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :