এক স্কুলে এক শিক্ষক!

শামীম কাদির, জয়পুরহাট
 | প্রকাশিত : ০২ এপ্রিল ২০১৭, ১১:৪৩

ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা জয়পুরহাট সদর উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের কল্যাণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রায় দুই যুগ ধরে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ দান করছেন মাত্র একজন শিক্ষক।

ওই বিদ্যালয়ে ছয়টি শ্রেণির ১৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীর সব কটি বিষয়ভিত্তিক ক্লাস নেন একজন মাত্র শিক্ষক। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম।

১৯৫৭ সালে শিক্ষানুগারী কিছু এলাকাবাসীর দান করা ৪৯ শতক জায়গার উপর স্থাপিত বিদ্যালয়টি। তারপর ১৯৯৪ সালে মূল ভবনটি নির্মাণ করা হয়। কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে যেতে হয় কল্যাণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ে ১৯৭৮ সালে নূরুন্নাহার নামে একজন শিক্ষিকা যোগদান করেন, তারপর যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বাধ্য হয়েই তিনি বিদ্যালয় সংলগ্ন গ্রামের একজনকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে তিনিই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তিনি অবসরে গেলে এখনও পর্যন্ত বিদ্যালয়ে কোন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি।

পর্যায়ক্রমে প্রেষণে (ডিপোটেশনে) শাহীন হোসেন তিন মাস, মাহফুজার রহমান ছয় মাস এই রকম অনেক শিক্ষককে সেখানে যোগদান করানো হলেও তারা কেউই বেশি দিন বিদ্যালয়ে থাকেন না।

সর্বশেষ যতীন মুর্মূ নামে একজন শিক্ষককে দেয়া হলেও তিনিও গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর দেড় বছরের জন্য প্রাইমারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ট্রেনিংয়ে চলে যান। ছাত্র-ছাত্রীদের কথা চিন্তা করে গ্রামের অনার্স পড়ুয়া দুইজনকে প্যারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তারা মাঝে-মধ্যেই ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে বিদ্যালয়ের পাঠ দান করেন।

বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র আহসান হাবিব, ছাত্রী সাবিনা বেগম ও ৫ম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার বলেন, একজন শিক্ষকই বাংলা, ইংরেজি, অংক সব বিষয় পড়ান। আমাদের আরও শিক্ষক লাগবে।

অভিভাভবক ময়জুল হোসেন, কামাল হোসেন চৌধুরী, এরশাদ আলীসহ অনেক অভিভাবক জানান, আমরা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেখি আসছি শিক্ষক আসে শিক্ষক যায়। কেউ দীর্ঘদিন থাকেন না। স্কুলে যোগদান করার দুই-তিন মাসের মধ্যে তদবির করে অন্য বিদ্যালয়ে চলে যান।

বিদ্যালয়ের এসএমসি পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, বারবার অফিসে যোগাযোগ করার পরও শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় না। ফলে আমাদের কোমলমতি শিশুদের লেখা-পড়ার প্রচুর সমস্যা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকসহ আরো কমপক্ষে তিনজন শিক্ষকের প্রয়োজন আমাদের প্রতিষ্ঠানে।

কল্যাণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র শিক্ষক রেজাউল করিম জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে কোন শিক্ষক এখানে আসতে চান না। আসলেও তদবির করে চলে যান সুবিধামত স্কুলে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, বাস্তবতা স্বীকার করে স্কুলটিতে যতদ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস দেন।

(ঢাকাটাইমস/২এপ্রিল/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :