ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে না গেলেও বেতন নেন দুই চিকিৎসক
গত এক বছরে এক দিনের জন্যও চিকিৎসাসেবা দেননি তারা। দিনের পর দিন আসেন না হাসপাতালে। কিন্তু মাসে মাসে নিয়মিত বেতন নিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের দুই চিকিৎসক। তাদের একজন নাক-কান-গলা বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট জহিরুল হক, আর অন্যজন শিশু বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট নুরুল আবছার।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে ওই দুই চিকিৎসক বদলি হয়ে আসেন এই হাসপাতালে। যোগদান পর্যন্তই দায়িত্ব সেরেছেন তারা। এরপর আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসেননি। এক দিনের জন্যও চিকিৎসাসেবা দেননি তারা। কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে তিন দফা চিঠি দেয়া হয় তাদের। কিন্তু তারা এসব চিঠির কোনো পাত্তা দেননি। অথচ বাড়িতে বসেই নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন মাসে মাসে।
সম্প্রতি জেলা সদর হাসপাতাল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বিনা কর্মে এ দুই চিকিৎসকের আর্থিক সুবিধা ভোগের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সভাপতি সদর আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ অন্য সদস্যরা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯ মার্চের ওই সভার পর দুই চিকিৎসককে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে তাদের অনুপস্থিত থাকার কারণ ব্যাখ্যা করতে বলেছে। চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনি অত্র স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সময় ও তারিখ কর্মস্থলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে কর্তব্যকাজে অনুপস্থিত আছেন। আপনি দীর্ঘ সময় অর্জিত ছুটি ভোগ করে যোগদানের পর নিয়মিতভাবে কর্মস্থলে আগমন করছেন না। আপনি মাঝেমধ্যে কর্মস্থলে আগমন করলেও যথাযথভাবে আপনার ওপর অর্পিত চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পালন করছেন না।’ তাদের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে না পাঁচ দিনের মধ্যে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয় চিঠিতে।
জেলা সদর হাসপাতালে নাক-কান-গলার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই তিন বছর ধরে। দুই বছর পদটি শূন্য থাকার পর এক বছর আগে জহিরুল হককে পোস্টিং দেয়া হয় এখানে। কিন্তু তার অনুপস্থিতির কারণে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। ডা. জহিরুল হক কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার রামনগর গ্রামের মৃত মো. মোকসুদ আলীর ছেলে। আর এস এম নূরুল আবছার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার সালীয়া গ্রামের এস এম নূরুল হুদার ছেলে।
ওই দুই চিকিৎসকের ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন ঢাকাটাইমসকে জানান, অনুপস্থিত থাকার কারণে তাদের দফায় দফায় চিঠি দেয়া হয়। এখন বেতনও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/৩এপ্রিল/মোআ)
মন্তব্য করুন