বাহারি শাড়ির একক মেলা

লেখা ও ছবি: শেখ সাইফ
| আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০১৭, ১১:৩৯ | প্রকাশিত : ০৩ এপ্রিল ২০১৭, ১৭:৪০

'আপনার পোশাকটি যদি অন্য কারো গায়ে থাকে তবে কেমন লাগবে? ধরুন আপনার অফিসের পিয়ন যে জামাটি পরেছে সেটি আপনার গায়ে। তখন সম্ভবতই আপনার ইগোতে লাগবে। আবার আপনার বসের পোশাকটির মতো পোশাক যদি আপনার গায়ে থাকে তাহলে বসও সম্ভবত মনে মনে অখুশি হবেন। অনেকেই চান না যে তার পোশাকটা অন্যের গায়ে থাকুক।' এইভাবে নিজের অনুভূতির কথা প্রকাশ করলেন শিল্পী কিবরিয়া।

রাজধানী ঢাকার সেগুন বাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালায় 'বাংলার শাড়ি, বাঙালির শাড়ি' প্রতিপাদ্য নিয়ে একক শাড়ির প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। হাতে আঁকা এবং বাটিক শাড়ির এটি দ্বিতীয় একক প্রদর্শনী।

তাঁত কাপড়ের এসব শাড়িতে হাতে এঁকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে হাজার বছরের আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ছবি, নিস্বর্গ, আলপনা, বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, দেশের গান, কবিতা ও বিভিন্ন লেখা।

নরসিংদী ও পাবনার তাঁতের শাড়ি নিয়ে কাজ করা শিল্পী কিবরিয়া বলেন, 'আমার শাড়ির মূল বৈশিষ্ট্য হলো, এক শাড়ি একটি, এটির অন্য কোনো কপি নেই। আমি নিজেও তৈরি করি না। প্রায় ৫০০ শাড়ি আছে এখানে যার প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা। রিয়াক্টিড ও পিগম্যান্টের মাধ্যমে শাড়ি তৈরি করা হয়েছে।'

একটি শাড়ি তৈরি করতে শিল্পী কিবরিয়ার পাঁচ থেকে ছয় দিন সময় লাগে। প্রতি বছরে প্রদর্শনীর জন্য বিভিন্ন বিষয় ধরে ধরে পাঁচশ শাড়ি তৈরি করেন বলে জানান তিনি। প্রতিটি শাড়ির মূল্য রাখা হচ্ছে দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা।

শিল্পী কিবরিয়া বলেন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয়বারের মতো এই শাড়ি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। প্রদর্শনীটি শেষ হবে ১৩ এপ্রিল। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে একক শাড়ি প্রদর্শনীর জাতীয় চিত্রশালার ৪ নম্বর গ্যালারি।

শিল্পী কিবরিয়া ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকির প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল। তিনি অষ্টম শ্রেণিতে থাকাকালীন ছবি আঁকার প্রতি মনোনিবেশ করেন। ছোটবেলায় বিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক আঁকাআঁকি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে পুরস্কার লাভ করতেন। শিল্পীর বাবার কাছ থেকেই মূলত বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। বাবা ব্যবসায়ী হলেও তিনি বাসায় অনেক সুন্দর ছবি আঁকতেন। বাবার ছবি আঁকা দেখেই তার ছবি আঁকার প্রতি ভালোবাসা জন্মায়।

এক নজরে শিল্পী কিবরিয়া

কাজি গোলাম কবরিয়া। ১৯৫৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারু ও কারুকলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি রাজশাহীর সোসাইটি অব ফাইন আর্টসের সদস্য সচিব ছিলেন। এসোসিয়েশন অব রাজশাহী আর্ট কলেজ এক্স স্টুডেন্ট, এ্যারাসেস, সভাপতি, চট্টগ্রাম চারুশিল্পী পর্ষদ, ঢাকা এর সহসাধারণ সম্পাদক, অ্যাকশন অন ক্যানসার প্রিভেনশন্নের সদস্য সচিব ও পরিচালক, ফেনী সোসাইটি উত্তরা, সাহিত্য ও স্বাংস্কৃতিক সম্পাদক। এছাড়া বর্তমানে আড়ং, কে ক্রাফট, আনন্দ বসন্ত ও আরশি নগরের সাথে উৎপাদন ব্যবস্থায় জড়িত।

(ঢাকাটাইমস/০৩এপ্রিল/এসএস/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :