কুমিল্লা সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন পরিকল্পনামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ এপ্রিল ২০১৭, ১৯:০৪

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। এই বৈঠকের আলোচ্যবিষয় না হলেও তাকে প্রশ্ন করা হলো সদ্য সমাপ্ত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে। কিন্তু ‘ওটা মূল্যায়নের আলাদা কমিটি আছে’ বলে প্রশ্নটি এড়িয়ে গেলেন তিনি।

সোমবার বিকালে রাজধানীতে আগারগাঁওয়ের পরিকল্পনা মন্ত্রীর কক্ষে এক বৈঠকে অংশ নেন জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কারডা ভারবুস। বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকরা কথা বলার সময় তাকে প্রশ্ন করা হয় সদ্য সমাপ্ত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে।

গত বৃহস্পতিবার যে এলাকায় এই নির্বাচন হয়েছে, তার একটি অংশ পরিকল্পনামন্ত্রীর সংসদীয় আসনে পড়েছে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর কাছে ১১ হাজার ভোটে হেরে যান। এর মধ্যে মুস্তফা কামালের সংসদীয় আসনের নয়টি কেন্দ্রে নৌকা ভোট কম পেয়েছে পাঁচ হাজারেরও বেশি।

ভোটের আগে কুমিল্লা ঘুরে আসা আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর নেতারা দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে যে বৈঠক করেছেন, তাতে তারা এই হারের জন্য পরিকল্পনামন্ত্রীকেও দায়ী করেছেন। তারা জানান, সেখানে দলের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার বাবা আফজল খানের সঙ্গে কেবল স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের দ্বন্দ্বই হারের পেছনে দায়ী নয়। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং রেলমন্ত্রী মজিবুল হকের ভূমিকাও ছিল নেতিবাচক। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

বৈঠকে কুমিল্লা নির্বাচনে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনকারী আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম প্রথমে কুমিল্লা নির্বাচনে স্থানীয় যেসব নেতা অসহযোগিতা করেছেন তাদের নাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও সীমার বাবা আফজল খানের দ্বন্দ্ব আছে। আর সেটা ধরে নিয়েই আমরা প্রচারণা চালিয়ে যাই। এর অংশ হিসাবে বাহার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আমরা প্রত্যাশিত ফল পেয়েছি। কিন্তু কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সভাপতি সরকারের মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল পাইনি। অথচ তিনি আমাদের জানিয়েছেন, তার নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে অন্তত ৫০ হাজার ভোট নৌকা পাবে।’

শামীম বলেন, ‘৫০ হাজার নয় ২০ হাজার্ ভোট তিনি নিশ্চিত করতে পারলেও আমাদের বিজয় নিশ্চিত ছিল।’ শামীম বলেন, নির্বাচনের পরেও তার ভূমিকা সন্দেহজনক। মোস্তফা কামাল ওই অঞ্চলের একজন দায়িত্বশীল নেতা হয়েও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।’

কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে ভোটের পর থেকে মুস্তফা কামাল বিষয়টি নিয়ে একবারের জন্যও প্রতিক্রিয়া জানাননি। দলের ভেতর ওঠা প্রশ্নের জবাব জানতে ঢাকাটাইমসের পক্ষ থেকে ফোন করে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবারের পর এই প্রথম গণমাধ্যমের সামনে এলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তার কাছে প্রশ্ন ছিল, ‘কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে তো আপনিও পরোক্ষভাবে ছিলেন। এই নির্বাচন নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?’। জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কুমিল্লায় আমার বাড়ি থাকবো না কেন। তবে ‘এটা (কুমিল্লা নির্বাচন) মূল্যায়ন তো আমি করবো না। এর জন্য পলিটিক্যাল কমিটি আছে আমাদের। তারা মূল্যায়ন করবে সেটা।’

কুমিল্লার বিষয়ে আর প্রশ্ন না করার অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘ইকোনোমিক্স নিয়ে প্রশ্ন যা করার করুন, আমি সেটার জবাব দেবো।’

মন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক বৈঠকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নই অবশ্য করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন শুরু করা মাত্রই এক গণমাধ্যমকর্মীকে থামিয়ে দেন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনি এখন প্রশ্ন করিয়েন না, অন্য সময়।’

ঢাকাটাইমস/০৩এপ্রিল/জেআর/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :