বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলায় চার প্রাণ, এলাকায় শোক

লালমনিরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ এপ্রিল ২০১৭, ১৭:৩২

ঝড়ে ছিঁড়ে পড়া তার মেরামতের কথা বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনের। কিন্তু তারা না এসে মাত্র ৭০০ টাকায় স্থানীয় বিদ্যুৎ মিস্ত্রিদের (ইলেক্ট্রিশিয়ান) সঙ্গে চুক্তি করে ৩৩ হাজার ভোল্টেজের লাইন মেরামতের। আর এই অবহেলায় প্রাণ যায় চার বিদ্যুৎ মিস্ত্রির।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই এলাকার কাছিম বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ রেখে শোক পালন করে এলাকাবাসী।

জেলা প্রশাসক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন দিনের মধ্যে তাদের রিপোর্ট দাখিলের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছেন। স্থানীয়রা লোকজন জানান, মঙ্গলবার বিকেলে বয়ে যাওয়া ঝড়ে উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের কাছিম বাজার এলাকার ৩৩ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিঁড়ে পড়ে। এতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুরো এলাকা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ছিঁড়ে পড়া তার মেরামত করতে নিজেরা না এসে মোবাইল ফোনে স্থানীয় ইলেক্ট্রিশিয়ানদের সঙ্গে ৭০০ টাকায় চুক্তি করে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন। চুক্তিমতো বুধবার (৫ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে উকিল মিয়া নামের একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান পিলারে ওঠেন। অন্য তিনজন ছিঁড়ে পড়া তার উপরে তুলে দিচ্ছিলেন। কাজের মাঝে হঠাৎ লাইন চালু হলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় চারজন। পিলারে থাকা উকিল ছিটকে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। নিচে থাকা খোরশেদ আলম, ফেরদৌস ও মিলটন হোসেন তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

আহত উকিলকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে কালীগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ এলাকায় একসঙ্গে চার মৃত্যু কখনো দেখেনি স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে ভেলাগুড়ি কাছিম বাজার এলাকায় বইছে শোকের মাতম। দোকান বন্ধ রেখে পালন করা হচ্ছে শোক।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যুতের কোনো সমস্যা হলে বিদ্যুৎ বিভাগকে ডেকেও পাওয়া যায় না। তারা নিজেরা না এসে স্থানীয় ইলেক্ট্রিশিয়ানদের দিয়ে সমাধান করেন।

কাছিম বাজার এলাকার মুকুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাতে ওই লাইনের তার তুলে দেয়ার পারিশ্রমিক নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা-কাটাকাটি হয় ইলেক্ট্রিশিয়ানদের। এ বিতর্কের জের ধরে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন এ দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্থানীয়দের সন্দেহ। তারা এর সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ এনামুল কবির, ওসি রেজাউল করিম, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ১৫ ব্যাটালিয়নের জাওরানী ক্যাম্পের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাট বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসনাত জামান জানান, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কারও গাফলাতির প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ মো. আলাউদ্দিন খান জানান, তদন্ত করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন চেয়ে হাতীবান্ধা ইউএনও সৈয়দ এনামুল কবিরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/৬এপ্রিল/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :