রক্ত দিয়ে মাঠ রক্ষার প্রত্যয় না.গঞ্জবাসীর
নারায়ণগঞ্জের খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ক্রিয়া সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নেমেছে। তাদের দাবি একের পর এক মাঠ বেদখল হয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ বরফকল মাঠ, আলীগঞ্জ মাঠ ও শিশু কল্যাণ মাঠ দখলের পায়তারা শুরু হয়েছে। রক্ত দিয়ে হলেও খেলার মাঠগুলো রক্ষার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধিসহ জেলা প্রশাসকেরও ভূমিকা দাবি করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়াপ্রেমী, সাবেক খেলোয়ার, ক্ষুদে খেলোয়ার, প্রমীলা খেলোয়ার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটি, সোনালী অতীত ক্লাব, খানপুরের পোলস্টার ক্লাব, আলীগঞ্জ ক্লাব, ফ্রেন্ডস ভ্যাটারানস ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের সদস্যরা সংহতি জানান।
এর আগে খানপুর, নগর খানপুর, হাজীগঞ্জ, তল্লার সর্বস্তরের এলাকাবাসীর উদ্যোগে শহরের ঐতিহ্যবাহী বরফকল মাঠের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়। এতে সংহতি জানান চাষাঢ়া শিশু কল্যাণ স্কুল মাঠ ও আলীগঞ্জ মাঠ রক্ষার আন্দোলনকারীরা। এসময় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া বিজয়স্তম্ভের সামনে দড়ি লাফিয়ে খেলার মাঠ দখল চেষ্টার অভিনব প্রতিবাদ জানান চাষাঢ়া শিশু কল্যাণ স্কুলের খেলোয়াররা।
আওয়ামী লীগ নেতা সামছুজ্জামান ভাষানীর সভাপতিত্বে মানবন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন আলীগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি এবং জাতীয় শ্রমিকলীগের শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহাম্মেদ পলাশ, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি হাজী নুরুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন মন্টু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার নুরুল হুদা, মুক্তিযোদ্ধা জহিরউদ্দিন মহি, মুক্তিযোদ্ধা মো. মজিবুল হক চুন্নু, বিষের বাশী পত্রিকার সম্পাদক সুভাষ সাহা, সাবেক ফুটবলার ও ঢাকা বিভাগীয় ফুটবল দলের কোচ আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন, আজমত খন্দকার, ফ্রেন্ডস ভ্যাটারানস ক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির পোকন, পোলস্টার ক্লাবের সভাপতি মো. আসলাম, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান, সাবেক সভাপতি তাওলাদ হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন, আসলাম, সেলিম, আলাউদ্দিন, সাবেক জাতীয় ফুটবলার শহীদুল ইসলাম স্বপন, জাকির হোসেন, গোলাম গাউস, সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার জাহাঙ্গীর আলম, রিয়াজউদ্দিন বিশ্বাস, সুজন, ইসলেহউদ্দিন, প্রমীলা ফুটবলার বিথী, ফুল পাখির আসরের সমন্বয়ক সাংবাদিক শরীফ সুমন, নির্ভীকের সমন্বয়ক মাকিদ মোস্তাকিম শিপলু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন, হুমায়ন কবির, সাবেক কাউন্সিলর দিলার মাসুদ ময়না, যুব রেড ক্রিসেন্টের সভাপতি হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ লোকমান, আব্দুল হালিম, অহিদুল ইসলাম ছক্কু প্রমুখ।
আলীগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহাম্মেদ পলাশ বলেন, এই নারায়ণগঞ্জ থেকে চুন্নু, এমিলি, গাউস, জাকির, স্বপন, মোনেম মুন্না, জাহাঙ্গীর, বিদ্যুৎসহ অনেক খেলোয়ার শুধু জাতীয় পর্যায়েই নয় আর্ন্তজাতিক পর্যায়েও খ্যাতি লাভ করেছিল। কিন্তু আজকে নারায়ণগঞ্জ থেকে যাতে খেলোয়ার সৃষ্টি না হয় এজন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমাদের সন্তানরা কি খেলোয়ার হবে নাকি মাদকসেবী হবে এর সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে।
আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি হাজী নুরুদ্দিন বলেন, খেলার মাঠকে মাঠ হিসেবে রাখার জন্য গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। প্রত্যেকটি পাড়া মহল্লার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্লাবগুলোকে সমন্বয়ের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক বলেন, যেকোন মূল্যে খেলার মাঠ রক্ষা করতে হবে। তিনি জেলা প্রশাসকের প্রতি মাঠ রক্ষার আন্দোলনের একাত্মতা পোষণের আহবান জানান।
পোলস্টার ক্লাবের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এর আগেও ১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে বরফকল মাঠটি দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল বিআইডব্লিউটিএ। তখন আমরা সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে সেই ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করেছিলাম। আজকে যদি বিআইডব্লিউটিএ’র ষড়যন্ত্র বন্ধ না হয় তাহলে আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে বিআইডব্লিউটিএ’র পোর্ট অফিসার ও নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করব। আপনারা কেউ হামলা মামলাকে ভয় পাবেন না। ন্যায়ের পক্ষের লড়াই সবসময়ই জয়ী হয়।
(ঢাকাটাইমস/৬এপ্রিল/প্রতিনিধি/জেডএ)
মন্তব্য করুন