ফরিদপুরের পেঁয়াজ বীজ ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র

মফিজুর রহমান শিপন, ফরিদপুর
 | প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল ২০১৭, ১২:৪৭

পেঁয়াজ বীজ চাষে হাসি ফুটেছে ফরিদপুরের কৃষকদের। দাম বেশি হওয়ায় চাষে লাভবান হচ্ছেন তারা। আর তাই একে তুলনা করছেন সোনার সঙ্গে। জেলার পেঁয়াজ বীজ চাষিরা ব্যস্ত বীজ ঘরে তোলার কাজে। সকাল থেকেই পরিবারের বিভিন্ন বয়সীদের নিয়ে সকলেই ক্ষেত থেকে বীজ তোলা কাজ করছেন।

ফরিদপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছে। এই মৌসুমে জেলার ছয় উপজেলাতে আড়াই হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে।

ফরিদপুর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবদুত রউফ বলেন, চলতি মৌসুমে ফরিদপুর অঞ্চলের ছয় হাজার ছয়শ মণের বেশি পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছি।

এই কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, সরকারের বিএডিসির সংগৃহিত মোট পেঁয়াজ বীজের ৭৫ শতাংশ ফরিদপুর জেলার। আমরা চেষ্টা করছি, এই বীজ চাষে জেলার বেকার যুবকদের উৎসাহিত করতে।

সরেজমিনে ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ও গোবিন্দপুর এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া ঠিকঠাক থাকায় পেঁয়াজ বীজ চাষে বেশ ভাল ফলন হয়েছে। বিঘাপ্রতি তিন মণের বেশি বীজ উৎপাদন হবে। বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি মণ পেঁয়াজ বীজের দাম ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। এই বীজ চাষাবাদে খরচ বিঘা প্রতি ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে বিঘাপ্রতি আড়াই লাখ টাকার বেশি লাভের আশা করছেন কৃষকরা।

সদর উপজেলার অম্বিকাপুর গ্রামের বিএডিসির তালিকাভুক্ত বীজ চাষি আবু বক্কার খান বলেন, এই বছর একশ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ করছি। খুব ভালো হইছে ক্ষেত। তিনি জানান, এই এলাকায় প্রথমে আমিসহ কয়েকজন মিলে পেঁয়াজ বীজের চাষ করি। আর এখন মাঠজুড়ে এই মৌসুমে শুধু পেঁয়াজ বীজের চাষ হয়। আমাদের এই এলাকার অনেক চাষি এখন আর্থিক ভাবে স্ববলম্বী হয়েছে।

একই এলাকার মো. আকবর খান বললেন, পেঁয়াজের এই কালো দানা আমাদের এলাকার ‘কালো সোনা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাজারে যে দাম পাওয়া যাচ্ছে, তাতে পেঁয়াজ বীজ আমাদের কাছে সোনার মতন।

তিনি জানান, আমাদের এই অঞ্চলের বীজ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকার বিএডিসির মাধ্যমে সরবরাহ করে।

তিনি দাবি করেন, বিএডিসি এবং বিভিন্ন ব্যাংক যদি আমাদের আরো বেশি সহায়তা করে- তাহলে ফরিদপুর অঞ্চলের মানুষ আরো বেশি বীজ উৎপাদন করতে পারবে।

গোবিন্দুপুর গ্রামে আরেক পেঁয়াজ বীজ চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, জমিতে যে ফলন দেখছি- তাতে বাম্পার উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন বাজার দর ঠিক থাকলে আমাদের অনেক লাভ হবে।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া পেঁয়াজ বীজ প্রসঙ্গে বলেন, ফরিদপুরের পাট ও পেঁয়াজ বীজের সারাদেশে সুনাম রয়েছে। তিনি জানান, এ বীজ চাষে অনেক বেকার যুবকরা তাদের কর্মস্থানের পথ খুঁজে পেয়েছে। কারণ অল্প খরচে অধিক মুনাফা লাভ করার সহজ উপায় হলো পেঁয়াজ বীজ চাষ। ফরিদপুর সদর, ভাঙ্গা, নগরকান্দা, সালথা, মধুখালী এবং সদরপুর উপজেলার পেঁয়াজ বীজ চাষিদের এখন আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।

(ঢাকাটাইমস/৭এপ্রিল/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :