কুড়িয়ে পাওয়া শিশুকে মায়ের কোল দিল ফেসবুক

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০১৭, ১৪:২৬ | আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭, ১৪:৩২

শওকত আলী, চাঁদপুর

চাঁদপুরের উত্তর মতলব এলাকার আড়াই বছরের শিশু আফরিন জাহান নিখোঁজ ছিল শনিবার দুপুর থেকেই। এখানে সেখানে শিশুটির সন্ধান করছিলেন পাগলপ্রায় বাবা-মা আর স্বজনরা। পরে একজন জানালো ফেসবুকে শিশুটির ছবি প্রকাশ হয়েছে। সে আছে চাঁদপুর শহরে। এরপর গভীর রাতে পরিমরি করে বাবা-মা ছুটলেন শহরে। রাত আড়াইটায় চাঁদপুর মডেল থানা থেকে শিশুটিকে নিয়ে ফিরলেন বাড়িতে।

শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে শহরের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় সৌদিয়া সিটির সামনে শিশুটিকে পাওয়া যায়। মা-বাবার কাছে যাবে বলে শিশুটি ক্রগাগত কেঁদে চলছিল। স্থানীয় দুই জন আইনজীবী দেখতে পেয়ে ফুটফুটে শিশুটিকে উদ্ধার করে। কিন্তু শিশুটি তার পরিচয় বলতে পারার মত কথা শেখেনি এখনও। কে তার বাবা, কে মা, সে কীভাবে এখানে এলো, তার কিছুই জানতে পারছিল না স্থানীয়রা।

পরে শিশুটিকে উদ্ধার করা আইনজীবী ফয়সাল ও মোবারক হোসেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পরামর্শে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে। পরে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে তাদের তত্ত্বাবধানে নিয়ে যান শিশুটিকে।

এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুটির তিনটি ছবি পোস্ট করেন একজন। আর তখনই তার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুরে। জানতে পারেন শিশুটির বাবাও।

ফেসবুকে নিজের ছেলের ছবি দেখে ছুটে আসেন বাবা নজরুল ইসলাম ও মা ফাতেমা আক্তার। তাদের বাড়ি একই জেলার মতলব উত্তর এলাকায়। সেখানকার প্রধানিয়া বাড়িতে থাকেন তারা।

বাবা-মা এসেছে জানিয়ে জিম্মাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। তারা শিশুটিকে নিয়ে আসে থানায়। রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে চাঁদপুর মডেল থানা থেকে শিশুটিকে বুঝে নেন তার বাবা-মা। তারাই যে শিশুটির বাবা-মা সেটির পরীক্ষাও দিতে হয় এই দম্পতিকে। থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপপরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন শিশুটিকে বাবা-মায়ের কাছে তুলে দেন।

বাবা মা জানান, শিশুটির নাম আফরিন জাহান। তবে শিশুটি কীভাবে সেখানে গেলো সেটি তারা বলতে পারেননি। তারা জানান, শনিবার দুপুর থেকেই তাদের মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। নানান জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে হয়রান হচ্ছিলেন তারা। এর মধ্যে একজন ফেসবুকে তার মেয়ের ছবি দেখান তাকে। এরপর তারা শহরে ছুটে আসেন। 

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অলিউল্লাহ অলি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের ধারণা, পাচারকারী চক্র শিশুটিকে নিয়ে এসেছিল। কোনো কারণে বেকায়দায় দেখে হয়ত তাকে ফেলে রেখে গেছে। মেয়েটি বাবা-মায়ের কোলে ফিরে যাওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি।’

ঢাকাটাইমস/০৯এপ্রিল/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি