চুয়াডাঙ্গায় কৃষকলীগের সম্মেলন, এলো না নতুন নেতৃত্ব
দীর্ঘ ১৮ বছর পর নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষকলীগের সম্মেলন। রবিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা শ্রীমন্ত টাউন হলের মুক্তমঞ্চে এই সম্মেলন হয়।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের একডজন নেতা উপস্থিত থাকলেও অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় নতুন কমিটি না দিয়েই ঢাকায় ফিরে যান নেতারা। আর এতে করে সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় হতাশা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৯ সালের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষকলীগের সব শেষ সম্মেলন। ওই সম্মেলনে আজিজুল হককে সভাপতি ও তছিরুল আলম ডিউককে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি গঠনের পর দীর্ঘ ১৮ বছর পার হলেও কমিটি একটি মিটিংও করতে পারেনি। এই নিয়ে সাধারণ নেতাকর্মীদের ক্ষোভ ও হতাশা চরমে পৌঁছায়।
আর এ অবস্থায় সম্প্রতি কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন। এই নির্দেশনার পর চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষকলীগের সম্মেলনের দিন নির্ধারণ করা হয় ৯ এপ্রিল।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি হিসেবে রবিবার দুপুরে শহরের শ্রীমন্ত টাউন হলে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
এরপর শুরু হয় চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষকলীগের সম্মেলনের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
জেলা কৃষকলীগের সভাপতি আজিজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা।
এছাড়া সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় সংসদের হুইপ, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।
প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন- কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শামসুল হক রেজা, বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলী আজগর টগর, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি শরীফ আশরাফ আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ সমীর চন্দ্র, সাংগাঠনিক সম্পাদক আতিকুল হক আতিক প্রমুখ।
প্রায় তিন ঘন্টা প্রথম পর্বের আলোচনা সভা শেষে পুরানো কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আতাহার হোসেন মোল্লা।
পরে কেন্দ্রীয় নেতারা সম্মেলনে উপস্থিত কাউন্সিলরদের কাছ থেকে নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম প্রস্তাব করার আহ্বান জানান। এর পরপরই সম্মেলনস্থলে উপস্থিত চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের দু,পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
পক্ষে-বিপক্ষে স্লোগান পাল্টা স্লোগানে গোটা সম্মেলনস্থলে উত্তেজনা ছড়াতে থাকে।
এ সময় কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা অমান্য করে নেতাকর্মীরা স্লোগান পাল্টা স্লোগান দিতে শুরু করেন। অবস্থা বেগতিক হবার আগেই কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত দুই পক্ষের কাউন্সিলদের কাছ থেকে সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি আজিজুল হক ও মোমিনপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার ও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে আব্দুর রশিদ, আসাদুজ্জামান কবির ও রফিকুর রহমানের নাম গ্রহণ করে তড়িঘড়ি করে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করে ঢাকায় ফিরে যান।
ঢাকায় গিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর পরামর্শক্রমে চুয়াডাঙ্গা কৃষকলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করবেন বলে জানান।
পরে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সভাপতি আতাহার হোসেন মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় এই পন্থা গ্রহণ করা হয়।
(ঢাকাটাইমস/৯এপ্রিল/প্রতিনিধি/এলএ)