হবিগঞ্জে মানবতাবিরোধী অপরাধে আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ এপ্রিল ২০১৭, ১৮:০৬

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়ের গোলাপকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার বিকালে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও হবিগঞ্জের ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার লোগাও গ্রামে তার বাড়ি থেকে গোপনীয়তার মধ্যে হবিগঞ্জ পুলিশ অফিসে নিয়ে আসা হলেও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো বা আটকের বিষয়টি স্বীকার করেনি পুলিশ। তবে মঙ্গলবার দুপুরে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশের যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাকে আটক করে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় হবিগঞ্জ পুলিশ অফিসে। এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হলেও পুলিশ মিডিয়ার কাছে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের এএসপি রাসেলুর রহমান ঢাকাটাইমসকে জানান, আবুল খায়ের গোলাপকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ স্টেশনে আনা হয়েছে। এখনো গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত হয়নি।

তবে মঙ্গলবার দুপুরে সহকারী পুলিশ সুপার হবিগঞ্জ সদর সার্কেল মো. নাজিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে ইস্যুকৃত ওয়ারেন্টের মূলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ট্রাইব্যুনালের হাতে হস্তান্তর করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৭ জুলাই গজনাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে একই উপজেলার নিশাকুড়ি গ্রামের আছকির উল্লাহর ছেলে মো. মানিক মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন বিচারক। হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের তৎকালীন ওসি মো. মোকতাদির হোসেন পিপিএম দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

একাত্তর সালে পাক হানাদার বাহিনীর সহায়তায় একাধিক মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্তত ২০ নিরীহ স্বাধীনতাকামী মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ ও বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হবিগঞ্জের রাজাকার শিরোমনি আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপ।

এই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সম্প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন জনৈক গেদু মিয়া। কিন্তু এর কিছুদিন পরই ওই মামলার বাদী আকস্মিক বাসচাপায় নিহত হন।

পরবর্তী সময়ে গোলাপের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থার কাছে জনৈক সুককরী বেগমসহ আরও ২/১ জন একাধিক অভিযোগ দাখিল করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আইজিপি আব্দুল হান্নান খান পিপিএমএর নির্দেশে গোলাপের অপকর্মের সন্ধানে মাঠে নামেন এএসপি নুর হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম। পৃথক দুটি তদন্ত প্রতিবেদনেই আবুল খায়ের গোলাপকে অভিযুক্ত করা হয়।

প্রসঙ্গত, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ওই আওয়ামী লীগ নেতা নৌকা প্রতীক পেয়ে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হন। তবে তার বিরুদ্ধে ৭১’সালে এ ধরনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এমন সংবাদ প্রকাশ হলে কেন্দ্রীয়ভাবে তাৎক্ষণিক তার মনোনয়ন বাতিল হয়। তবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে গোলাপ আনারস প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করলেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত নতুন প্রার্থী ইমদাদুর রহমান মুকুলের কাছে ধরাশায়ী হন।

(ঢাকাটাইমস/১১এপ্রিল/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :