জল ছিটিয়ে নতুন বছরকে বরণ করল মারমারা
পরস্পরের মাঝে জল ছিটিয়ে পুরনো বছরের সমস্ত গ্লানী মুছে ফেলে মারমা পঞ্জির নতুন বছরকে বরণ করে নিলেন পাহাড়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী মারমা সম্প্রদায়।
শনিবার রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চিংম্রং এ সাংগ্রাই উদযাপন কমিটি আয়োজন করে জল উৎসবের।
দুপুর পৌনে ১২ টায় এই উৎসবের উদ্বোধন করেন রাঙামাটি আসনের সংসদ সমস্য উষাতন তালুকদার। উদ্বোধনের পর পরই মারমা তরুণ তরুণীরা জল খেলায় মেঠে উঠেন।
৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের তাবুর নিচে দুই সারিতে রাখা হয় ৪টি নৌকা। নৌকায় পানি ভরা সম্পন্ন হলে গ্রাম ভিত্তিক তরুণ-তরুণীরা দলবদ্ধভাবে জল খেলায় মেঠে উঠেন।
নৌকার পানি শেষ হলে শেষ হয় দল ভিত্তিক জল খেলা। পরে খালি নৌকায় পানি ভরিয়ে আবার অন্য গ্রামের তরুণ-তরুণীরা দলবদ্ধ হয়ে জল খেলায় মেঠে উঠেন। এভাবে সারা দিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা তরুণ-তরুণীরা একে অপরের মাঝে জল ছিটান।
আয়োজকরা জানান, গৌতম বুদ্ধের সময় মহেন্দ্র নামে এক রাজা ছিলেন। এই রাজার রাজ্যে প্রতি বছর সংগঠিত অমঙ্গল কর্ম থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য মহেন্দ্র গৌতম বুদ্ধের কাছে প্রার্থণা করলে বুদ্ধ রাজাকে মারমা পঞ্জির বছরের শেষ দিন মঙ্গল সূত্র শ্রবন ও মন্দিরে রক্ষিত বৌদ্ধ মূর্তি গোসলের উপদেশ দেন।
মারমারা বিশ্বাস করেন বৌদ্ধ মূর্তি ধোয়ার পানির সংস্পর্শে এসে পৃথিবীর সব পানি পবিত্র পানিতে পরিণত হয়। এই পানি রাজ্য জুড়ে ছিটানোর মাধ্যমে রাজ্যকে পবিত্র করা যায়।
বুদ্ধের উপদেশ অনুযায়ী রাজা কাজ করলে সেই বছর রাজ্যতে কোনো অমঙ্গল কাজ হয়নি। এর পরবর্তী বছর থেকে রাজকুমার তার বাবার হস্তান্তরিত কাজ সম্পন্ন করেন। এই অনুসারে মারমারা যুগ যুগ ধরে এই অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন। সাংগ্রাই উৎসব আয়োজক কমিটির সদস্য কংচাই প্রু মারমা বলেন, জল খেলায় শুধু অবিবাহিতরা অংশ নিতে পারেন।
রবিবার রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় দিনের মত জল উৎসব পালনের মধ্যে দিয়ে মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব শেষ হবে। (ঢাকাটাইমস/১৬এপ্রিল/প্রতিনিধি/ইএস)