শরীয়তপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাঁচ ছাত্রীর যৌন হয়রানির অভিযোগ
জেলার সদর উপজেলার ৬৩ নম্বর বিনোদপুর ঢালীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাঁচ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির চারজন ও তৃতীয় শ্রেণির একজন ছাত্রীর পক্ষে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক এস এম কাউছার মিলনের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
অভিভাবক ও হয়রানির শিকার ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক এস এম কাউছার টিফিনের পর নিরিবিলি সময়ে ছাত্রীদের একাকী তার রুমে ডেকে নিতেন। এ সময় বই দাগানো ও পড়া দেখানোর ছলে ছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন। এ বিষয়ে কাউকে বললে পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেন।
ছাত্রীরা প্রথম দিকে বিষয়টি ভয়ে চেপে গেলেও একপর্যায়ে অভিভাবকদের জানায় বিষয়টি। গতকাল সোমবার অভিভাবকরা ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ তদন্তে আজ মঙ্গলবার দুপুরে স্কুলে যান সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আলম। খবর পেয়ে এলাকাবাসী বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে জড়ো হন এবং প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক তার কক্ষে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। উত্তেজিত এলাকাবাসী এ সময় প্রধান শিক্ষকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
যৌন হয়রানির শিকার পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, ১০-১২ দিন আগে টিফিনের সময় বই দাগানোর কথা বলে প্রধান শিক্ষক তাকে লাইব্রেরিতে ডেকে নেন। এ সময় সেখানে থাকা তার এক সহপাঠীকে (এই ছাত্রীও যৌন হয়রানির শিকার) তিনি বিদায় করে দেন। পরে তিনি ছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকেন এবং পরীক্ষায় বেশি নম্বর দেয়ার কথা বলেন। এ সময় সে চলে আসার জন্য জোরাজুরি করলে প্রধান শিক্ষক নোংরা কথা বলেন এবং এসব কথা কাউকে বললে পরীক্ষায় ফেল করার হুমকি দেন।
প্রধান শিক্ষক কাউছার মিলনকে একজন বিকৃত রুচির মানুষ হিসেবে উল্লেøখ করে ওই ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, ‘আর কোনো শিশু যাতে এই শিক্ষকরূপী পশুর হাতে নিগৃহীত না হয় এ জন্য পরিবারের মানসম্মান বাদ দিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি।’
তবে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করছেন প্রধান শিক্ষক কাউছার। তিনি দাবি করেন, এগুলো মিথ্যা অভিযোগ। তাকে ফাঁসানোর জন্য একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করে এসব করছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আলম বলেন, ‘অভিযোগ তদন্তের জন্য বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। ছাত্রীদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছি।’ আগের পাঁচজনের পাশাপাশি আরো ছয়জন ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছে বলে জানান তিনি।
(ঢাকাটাইমস/১৮এপ্রিল/মোআ)
মন্তব্য করুন