তারাগঞ্জের সড়কে সবুজের সমারোহ

রফিকুল ইসলাম রফিক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ এপ্রিল ২০১৭, ০৮:১০

পল্লীগ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠো পথ থেকে শুরু করে মহাসড়ক, যে পথেই যান না কেন সবুজ দৃশ্য দেখে আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে। লিক লিক করে বেড়ে ওঠা গাছের পাতা ও ডালে ডালে পাখিদের ছোটোছুটি দেখে এক নিমিষেই ভরে উঠবে আপনার হৃদয় মন। সবমিলিয়ে অন্যরকম এক ভালোলাগা দৃশ্য চোখে পড়বে তারাগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি সড়কে।

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় ‘সবুজ তারাগঞ্জ গড়ি’ কর্মসূচির আওতায় ১৫৩টি সড়কের ৪৬০ কিলোমিটার এলাকার দুই ধারে আড়াই লাখ ফুল, ফল ও ভেষজ গাছের চারা রোপণ করা হয়। এর মধ্যে ১৪ প্রজাতির ফুল, ১৪ প্রজাতির ফল ও ৬ প্রজাতির ভেষজ গাছের চারা রয়েছে।

এলজিএসপি’র আর্থিক সহায়তায় স্থানীয় প্রশাসন, বন বিভাগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নার্সারিসহ সাধারণ মানুষের দেয়া এসব গাছ লাগানোর মাধ্যমে ইতিহাস গড়ে তারাগঞ্জবাসী। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই বৃক্ষ রোপণের এই মহাযজ্ঞে অংশ নেয় প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। সকাল সাতটা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে তারা গাছগুলো রোপণ করে রেকর্ড সৃষ্টি করেন। দিন দিন এসব গাছ বড় হচ্ছে পরম মমতায়।

বুধবার সরেজমিনে তারাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সড়কে গিয়ে দেখা গেছে নয়নাভিরাম দৃশ্য। গাছের সবুজ পাতা আর ঝিরঝির বাতাসে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করছে। তারাগঞ্জ উপজেলা এখন সবুজে ভরে ‍উঠেছে। গাছগুলো আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে। আরও সেগুলোকে সন্তানের মতো যত্ন করছেন স্থানীয়রা। এদের মধ্যে যেসব গাছ নষ্ট হয়েছে সেখানে আবার নতুন করে গাছের চারা রোপন করা হচ্ছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে চার হাজার উপকারভোগী গাছগুলোর পরিচর্যার কাজ করছেন। উপজেলা পরিষদ, সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের মধ্য একটি চুক্তি হবে, সেই চুক্তির কাজ প্রায় শেষ। চুক্তিটি হলে উপকারভোগীরা সেখান থেকে উপকৃত হবেন।

সারাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম মহিউদ্দিন আজম কিরণ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা সন্তান যেভাবে মানুষ করি, ঠিক সেভাবেই গাছগুলোর যত্ন নিচ্ছি।’ তিনি বলেন, সত্যিই আমাদের অনেক ভালো লাগছে। উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরলে যেন মন ভরে যায়।

উপজেলার গলাকাট এলার আকবর হোসেন জানান, ‘গাছগুলো যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি এবং সেগুলোর যত্ন নিচ্ছি। গাছগুলো বড় হতে দেখে অনেক ভালো লাগছে।’

গাছগুলোর সঠিক পরিচর্যা করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিলুফা সুলতানা বিভিন্ন সময় উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সদস্যসহ স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াও বৈঠক করেন। মাঝে মাঝে এলাকায় ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

তবে বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেন, জমির পাশে গাছ রোপন করায় স্থানীয় কিছু ব্যক্তি সেগুলো রাতের আঁধারে নষ্ট করে ফেলছেন। ফলে আড়াই লাখ গাছ মাঠে এখন নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিলুফা সুলতানা ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘উপজেলার সব শ্রেণিপেশার মানুষের সহযোগিতা থাকায় গাছগুলো আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘তারাগঞ্জ একটি অনুপ্রেরণার জায়গা। ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ যে কথাটি আমরা বলি তার সবগুলির ব্যবহারই দৃশ্যমান একটি স্পট তৈরি হয়েছে তারাগঞ্জে।’ গাছগুলো বড় হওয়া পর্যন্ত সবার প্রচেষ্টা থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।

ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/আরআই/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :