পচা ধানে হাকালুকিতে মরছে মাছ
বোরো চাষিদের পর এবার হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন সবচেয়ে বড় হাওর হাকালুকি পারের মৎসজীবীরা। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় হাকালুকি হাওরে বিভিন্ন জাতের মাছ মরে যাচ্ছে।
স্থানীয় মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে থাকা আধা পাকা ও কাঁচা বোরো ধান পচে পানি দূষণ হচ্ছে, পাশাপাশি ধানে ব্যবহৃত কীটনাশকও এর কারণ। আর ধান পচে পানিতে অ্যামোনিয়া ও হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের সৃষ্টি হওয়ায় মাছ মারা যাচ্ছে। প্রথমে ছোট মাছ মরে ভেসে উঠলেও এখন গভীর জলের সবধরনের মাছ মরে ভেসে উঠছে।
মৌলভীবাজার জেলার মৎস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত হাকালুকি হাওর। প্রতিবছর গড়ে তিন উপজেলায় প্রায় ছয় হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। কিন্তু গত দুই দিন ধরে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় হাকালুকি হাওরে পুঁটি, ট্যাংরা, মলা, পাবদা, চাপিলা, বোয়াল, রুই, ঘনিয়াসহ বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা মরে পানিতে ভেসে উঠছে জানালেন স্থানীয় মৎসজীবীরা।
এখন বিল ও আশপাশের ভাসান পানিতে বিভিন্ন জাতের মাছ মরে ভেসে উঠছে। এমন অবস্থায় হতাশ বিল ইজারাদাররা।
মাছ মারা যাওয়ার কারণ সম্পর্কে কুলাউড়া উপজেলা মৎস কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন, পানিতে অ্যাসিড বেড়ে যাওয়া ও ক্ষার কমার কারণে এমনটাই হয়েছে, অ্যাসিড এর মাত্রা ৮ দশমিক ৫-এর বেশি হলে পানির স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। পাহাড়ি ঢলে পানিতে তলিয়ে থাকা ধান পচে অ্যামোনিয়া ও হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের সৃষ্টি হয়েছে। এসব কারণে বিভিন্ন জাতের মাছ মরে ভেসে উঠছে। তবে হাওরে মাছ ধরা বন্ধে এলাকায় মাইকিং করেছে তিন উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর। আর মাছের মড়ক ঠেকাতে হাওরে প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রয়োগ করা হবে বলে জানান তিনি।
তবে হাওরে কী পরিমাণ মাছ মারা গেছে, এর কোনো পরিসংখ্যান মেলেনি। পোনা মাছ মারা যাওয়ায় এবার জেলায় মাছ উৎপাদনে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
(ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/প্রতিনিধি/জেবি)