পাঁচ দিনে চার খুন, আতঙ্কে বগুড়াবাসী

প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০১৭, ১৪:৪৬

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে

সাম্প্রতিক সময়ে বগুড়ায় একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে। পাঁচ দিনে চার খুন হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন, বগুড়া কী তাহলে খুনের নগরীতে পরিণত হতে চলেছে? এসব খুনের সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া একটি চক্রের কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না ছিনতাই।

চলতি মাসের ১৬ তারিখে প্রকাশ্যে দিবালোকে বালু ব্যবসায়ী হযরত আলী খুনের চার দিনের মাথায় ১৯ এপ্রিল বগুড়ার সদরের গোকুল এলাকার একটি বিল থেকে অটোচালক তোতা মিয়ার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একই দিন আরেক অটোচালক সিদ্দিকুর রহমানের লাশ পাওয়া যায় কাহালু উপজেলার দরগাহাট এলাকায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার শহরের মালতিনগর এলাকার একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এর কয়েক দিন আগে ১৩ এপ্রিল বগুড়ার গাবতলীতে জমিজমা ও পূর্ব শক্রতার জের ধরে প্রতিপক্ষের লোহার রড ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত জেল্লাল রহমান নামে এক বৃদ্ধ মারা যান।

একের পর এক হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি বগুড়া শহরে ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হলেও কোনো কাজে আসছে না। এর ফলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে ছিনতাইকারীরা।

চলতি মাসের ৭ তারিখে শহরের ঠনঠনিয়া এলাকায় দুর্বৃত্তের হামলায় আহত হন এটিএন বাংলার বগুড়া অফিসের ক্যামেরাম্যান আজিজুল হাকিম। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর সন্ত্রাসীরা তাকে কোপায়। আহত আজিজুল বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

একের পর হত্যাকাণ্ড ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও এখনো জড়িতদের ধরতে না পারায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েও থানায় অভিযোগ করছেন না। ফলে বগুড়ার মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পুলিশ ছোটখাটো ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করলেও সামগ্রিক অবস্থা স্বীকার করতে চাচ্ছে না।

একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন মনিরুজ্জামান। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘চাকরির প্রয়োজনে অনেক সময় রাতে কাজ করতে হয়। বগুড়ায় যেভাবে খুন বাড়ছে তাতে রাতে চলাচল করতে ভয় লাগে। তারপরেও চাকরির স্বার্থে বের হতে হয়।’

শহরের সাতমাথা এলাকায় কথা হয় আব্বাস আলী নামে একজনের সঙ্গে। তিনি ঢাকায় যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষা করছেন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘চাকরির প্রয়োজনে ঢাকায় থাকি। কিন্তু পরিবারের সবাই বগুড়ায় থাকেন। পত্রপত্রিকায় বগুড়ার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যা দেখছি তাতে ভয় লাগছে। কখন যে কি হয় এ নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাতে হয়।’

জানতে চাইলে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদ হোসেন বলেন, ‘ছোটখাটো মোবাইল ছিনতাইকারী আছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বড় কোনো ছিনতাইয়ের ঘটনা নেই। তারপরেও বিষয়গুলো দেখা হবে।’

ঢাকাটাইমস/২১এপ্রিল/প্রতিনিধি/এমআর