উদাসীন উন্নয়নে জনদুর্ভোগ

শেখ সাইফ
 | প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল ২০১৭, ১৬:১৮

ঢাকা শহরে অনেক দিন ধরেই চলছে মেট্রোরেলের কাজ। এর জন্য দীর্ঘদিন যানজটে ভুগতে হচ্ছে নগরবাসীকে। তবে এ জন্য কারো কোনো আক্ষেপ নেই। সাময়িক অসুবিধা মেনে নেয় একদিন সুফল পাওয়ার আশায়। তবে সবাই চায় পরিকল্পিত উন্নয়ন। কীভাবে জনভোগান্তি এড়িয়ে উন্নয়নকাজ করা যায় সেটাই আশা করে সবাই।

কোনো প্রয়োজনে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করার সময় বন্ধ হয়ে করা হয় রাস্তা। ধুলাবালি উড়ে মানুষের যাতায়াতে কষ্ট হয়। রাস্তার আশপাশের দোকানপাট ভরে যায় ধুলায়। ঠিকভাবে কাজকর্ম করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে কাজ যদি বর্ষার সময় করা হয় তাহলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট একাকার হয়ে যায়। কাদা আর বৃষ্টিতে জীবন নাজেহাল হয়ে ওঠে। খানাখন্দে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। কাপড়চোপড় নষ্ট হয়, হাঁটাচলা দুরূহ হয়ে ওঠে। মিরপুরবাসীর নিত্য চলমান দুর্ভোগের চিত্র এমনই। তার সঙ্গে এখন নতুন দুর্ভোগ হয়ে উঠেছে বিভিন্ন গলি খোঁড়াখুঁড়ি।

রাজধানী ঢাকার মিরপুরের পশ্চিম কাজীপাড়া। প্রায় সপ্তাহ তিনেক গলির ভেতরে কাজ চলছে। পয়োনিষ্কাশনের সংস্কারের জন্য রাস্তা খুঁড়ে পুরনো বড় বড় কংক্রিটের পাইপ তুলে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছে। গলির আশপাশের ভবনগুলো থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি আর বের হতে পারে না। মানুষের চলতেও সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু সেদিকে নজর নেই কর্তৃপক্ষের। তাদের উদাসীনতা আর অব্যবস্থাপনার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বেশি।

কাজ যেদিক থেকে শুরু করা হয়েছে তা এখন বেশ দূরে চলে গেছে। কিন্তু শুরুর অংশের উপরে তুলে রাখা ভাঙাচোরা সিমেন্টের চোঙ, ময়লা কাদামাটি, ঠিক সেভাবেই রেখে দেওয়া হয়েছে। এগুলো কবে সরানো হবে তার খবর কেউ বলতে পারে না।

এমনিতে চলাচলে মারাত্মক অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। তারপর শুরু হয়েছে বৃষ্টি। পচা ময়লা কাদামাটি, গলি ব্লক, পিচ্ছিল কাদা। চলাচলে এমন অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে যে বাসা থেকে বের হতেই ইচ্ছে করে না।

উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যদি একটু সচেতন হয়ে বর্ষা আসার আগেই কাজগুলো শেষ করে তাহলে এত ভোগান্তি আর কষ্ট মানুষকে পোহাতে হতো না। বিশেষ করে শীত মৌসুমে কাজগুলো শুরু এবং শেষ করলে অনেক উপকার হয়।

কথা হয় পশ্চিম কাজীপাড়ার ৩৪০ নম্বর ভবনের বাসিন্দা ওয়াহেদ তালুকদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'কয়েক দিন ধরে আমি বাসাতেই আছি। রাস্তা দিয়ে চলার তো কোনো পরিস্থিতিই নেই। মসজিদে নামাজ পড়তেও যেতে পারি না। রাস্তার যে বেহাল দশা করে রেখেছে। চলতে গেলে পা স্লিপ কেটে সোজা গর্তে পড়তে হবে। আর এখন তো বৃষ্টি।’

নাতির হাত ধরে রাস্তা পার হচ্ছিলেন আব্দুর রশিদ আলম। তিনি তার নাতিকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। শক্ত হাতে নাতির হাত ধরে খুব সাবধানে রাস্তা পার হচ্ছেন। তিনি বলেন, 'আমরা মহাবিপদে আছি। না পারছি বাজারসওদা ঠিকমতো করতে, রিকশা আসতে পারছে না। ছেলেমেয়েদের স্কুলে যেতেও মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে।'

অনেকে জানালেন, ময়লা নিতে আসছে না পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। রাস্তার রিং যেদিকে বসানো হয়েছে, সেদিক যদি রাস্তা মাটি দিয়ে আবার ভরাট করে দেওয়া হতো আর ভাঙাচোরা রিংগুলো সরিয়ে ফেলত তবে চলাচলে অসুবিধা অনেক কম হতো। সব রাস্তার উপরেই রাখছে। এদের মতিগতি বোঝা দায়। আর কাজও তো চলছে ঢিলেতালে।

লেখক: আলোকচিত্র সাংবাদিক, ঢাকাটাইমস ও এই সময়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :