আরও অনেকদিন বাঁচতে চেয়েছিলেন লাকী আখান্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০১৭, ১৯:৪৪ | প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল ২০১৭, ১৮:০৮

আরও অনেক দিন এই পৃথিবীতে থাকার প্রত্যাশা ছিল জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী লাকী আখান্দের। তাকে শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজনে এসে আক্ষেপের সুরে এই কথা জানালেন তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক।

লাকী না ফেরার দেশে চলে গেছেন শুক্রবার। তার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না বেশ কয়েক মাস ধরেই। পরদিন শনিবার তাকে শেষবারের মত নেয়া হল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, জানানো হলো রাষ্ট্রীয় সম্মান।

জনপ্রিয় এই শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে আসেন বিশিষ্টজনেরাও। এ সময় তারা এই শিল্পীর স্মৃতিচারণ করেন।

লাকী আখান্দের বন্ধু ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘সবশেষ যখন লাকীর সঙ্গে দেখা তখন বলেছিলো বন্ধু আমার আরো অনেক বাঁচতে ইচ্ছে করেরে। আরো অনেক গান গাইতে ইচ্ছা করে। মনে হয় বেঁচে গেলাম। আমি কিন্তু আবার প্র্যাকটিস করছি।’

গান পাগল এই মানুষটি হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে আবারো গান নিয়ে মাঠে নামতে চেয়েছিলেন। বাংলা গানকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখতেন।

শিল্পীর আসলে মৃত্যু নেই মন্তব্য করে আনিসুল হক বলেন, লাকী বেঁচে থাকবেন সব সময়। তিনি বলেন ‘আমি শুধু আজকে এতটুকু বলবো, বন্ধু আসলেই তুমি বেঁচে গেছো। বন্ধু তুমি বেঁচে আছো। গান হয়তো গাইতে পারবে না। কিন্তু শতশত গান তুমি যা তুমি গেয়েছো তা অনেক দিন, বহু যুগ,শতাব্দী আমাদের মধ্যে গাইবে। তুমি মরনি। আমাদের মধ্যে বেঁচে আছো, বেঁচে থাকবে। তোমার জন্য শুভকামনা। তুমি ভালো থাকবে।’

লাকী আখান্দের জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৮ জুন। ৬১ বছরের জীবনের শুরুর দিকে গিটার হাতে লাকী আখান্দ বাংলাদেশের আধুনিক গানে যোগ করেন নতুন ছন্দ। ভাই হ্যাপী আখান্দের মৃত্যুর পর থেকে প্রয় এক দশক নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলেন তিনি। গত শতকের একেবারে শেষভাগে নতুন গান নিয়ে শ্রোতাদের মাঝে ফিরে এসেছিলেন গুণী এই শিল্পী। কিন্তু বছর দেড়েক আগে তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে।

গুরুতর অসুস্থ হয়ে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে লাকী আখান্দের ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে।

এরপর থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন লাকী। সেখান থেকে ঢাকায় ফেরার পর কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। তার চিকিৎসায় সহায়তা করা হয় প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকেও।

সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা আড়াইমাস থাকার পর গত ৭ এপ্রিল আরমানিটোলার বাসায় ফেরেন শিল্পী।

লাকী আখান্দের মৃত্যুর খবরে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া।

শিল্পীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তার সহকর্মী, শিল্পী ও পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। তার সৃষ্টিকর্মকে সংরক্ষণ করার দাবি জানান।

লাকী আখান্দের মেয়ে মাম্মিন্তি নূর আখান্দ বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, ‘আমার বাবা দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন, গান দিয়ে মানুষের মনে আনন্দ দিয়েছে। তার যদি কোনো ভুল ত্রুটি থাকে তবে ক্ষমা করবেন, আমার মা বাবার জন্য দোয়া করবেন।’

শ্রদ্ধা জানাতে শেষে শিল্পী নকীব খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘লাকী ভাই একজন গুনী শিল্পী ছিলেন। তাকে চলে যাওয়ায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো। কারণ তিনি বাংলা গানকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। আমাদের প্রায়ই বলতেন। সেই সুযোগটা হলো না।’

(ঢাকাটাইমস/২২এপ্রিল/বিইউ/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :