জার্মানে বাংলাদেশি দম্পতিকে হয়রানির অভিযোগ

ইউরোপ ব্যুরো প্রধান, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল ২০১৭, ১৮:২৪

জার্মানির বাসে করে জুরিখ থেকে হাইডেলসহাইমে ফিরছিলেন বাংলাদেশি দম্পতি আসগর হোসেইন ও ইউসরা জাফরিন। হাইডেলবার্গে যাত্রাবিরতির সময় স্বামীকে বাসে রেখেই পাশের ম্যাকডোনাল্ডস রেস্তোরাঁর টয়লেটে গিয়েছিলেন জাফরিন। কিন্তু ফিরে দেখেন বাস তার স্বামীকে নিয়ে চলে গেছে, সঙ্গে চলে গেছে জাফরিনের শীতের জ্যাকেট, মোবাইল, পার্স সবকিছু। জার্মান ভাষা না-জানা এবং জার্মানিতে নতুন আসা জাফরিন আতঙ্কে কেঁদে ফেলেন। তীব্র ঠাণ্ডার মাঝে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে খুঁজতে থাকেন স্বামীকে।

অন্যদিকে, স্বামী তখন বাসচালকের কাছে কাকুতিমিনতি করছেন বাস থেকে যেন তাকে অন্তত নামিয়ে দেয়া হয়, যাতে স্ত্রীর কাছে ফিরে যেতে পারেন।

এক পর্যায়ে ক্ষণিকের জন্য বাসের দরজা খুলে দেয় চালক। ততক্ষণে স্টেশন থেকে বাস চলে গেছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। আর তাকে নামতেও হয় লাগেজ ছাড়াই।

বাসের অপরিচ্ছন্ন টয়লেট দেখে ম্যাকডোনাল্ডসে গিয়েছিলেন জাফরিন। পাঁচ ঘণ্টা যাত্রার পর টয়লেট ব্যবহারের চাহিদা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু বাসচালক তাকে না নিয়ে চলে গেলেন কেন? আসগর হোসেইন পুরো ঘটনাটি ফেসবুকে লিখেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিদেশি বলেই তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করেছে বাসচালক।

তার পোস্টটি ইতোমধ্যে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করা হয়েছে। অনেকেই বাসচালকের এমন আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

জার্মানির বাস কোম্পানি ফ্লিক্সবাস-এর একজন মুখপাত্র ডয়চে ভেলেকে জানান, হাইডেলবার্গে গত ১৮ এপ্রিল হোসেইন এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে যা ঘটেছে, তার জন্য তারা অত্যন্ত দুঃখিত। এজন্য তাদের বাসের টিকিটের মূল্য ফেরত দেয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

ফ্লিক্সবাসের কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স-এর প্রধান বেটিনা এনগার্ট আরো উল্লেখ করেছেন, তাদের বাসগুলো নির্দিষ্ট সময় মেনে চলে এবং হাইডেলবার্গে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দাঁড়িয়েছিল। আর যে চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজেও বিদেশি বংশোদ্ভূত এবং তিন বছর ধরে কোম্পানির বাস চালালেও তার বিরুদ্ধে এর আগে কোনো অসদাচরণের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কিন্তু আসগর হোসেইন বলেছেন, হাইডেলবার্গে যখন বাস ছাড়ছিল, তখন তার স্ত্রীকে ম্যাকডোনাল্ডস থেকে ফিরতে দেখা যাচ্ছিল। সাকুল্যে তার স্ত্রী হয়ত দুই মিনিট দেরি করেছেন, আর তাতে তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা, ওই কোম্পানির বাস মাঝে মাঝে এমনিতেই অনেক দেরি করে।

তিনি বলেন, আমরা পরে যে বাসে করে ফিরেছি, সেটাও ফ্লিক্সবাস ছিল। সেই বাসের চালক ও সহকারী জানিয়েছেন যে, কোনো প্রয়োজন হলে আমরা পাঁচ থেকে দশ মিনিট অবধি অপেক্ষা করতে পারি।

হোসেইন অবশ্য এখনো লাগেজ ও অন্যান্য জিনিসপত্র ফেরত পাননি। যে হয়রানির শিকার তারা হয়েছেন, তার বিচার দাবি করে আইনি উদ্যোগ নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন জার্মানিতে চাকুরিরত এই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।

(ঢাকাটাইমস/২২এপ্রিল/সিকে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :