নির্বাচন ফ্রান্সে, আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র
টানটান উত্তেজনা আর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে পশ্চিম ইউরোপের অন্যতম শীর্ষ গণতন্ত্র ও অর্থনীতির দেশ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ রবিবার। অথচ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিগত সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভে তুরুপের তাস হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুসরণ করা কট্টর জাতীয়তাবাদী আদর্শই ব্যবহৃত হতে যাচ্ছে। যদিও অস্ট্রিয়া এবং নেদারল্যান্ডসে উগ্র দক্ষিণপন্থী দলগুলো সাম্প্রতিক নির্বাচনে সুবিধা করতে পারেনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো অভিবাসীদের উপর করাত চালাতে অর্ধশতাধিক অঙ্গীকার করেছেন ‘ফরাসি ট্রাম্প’ খ্যাত ডানপন্থী নেতা লো পেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী লো আন্তর্জাতিক বানিজ্যের ক্ষেত্রেও ট্রাম্পকে অনুসরণ করবেন বলে প্রচারণায় জানিয়েছেন। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবার ফ্রান্সের লিঁও শহরে হাজার হাজার সমর্থকদের উদ্দেশ্য ভাষণকালে কড়া অভিবাসন ও বিশ্বায়নের বিরোধী পেন বলেন- সম্প্রতি ট্রাম্পের জয় এবং ব্রিটেনর ব্রেক্সিটের কারণেই ফরাসিরা তাকে ভোট দেবেন।
জনমত জরিপে ম্যানুয়েল ম্যাকরন এগিয়ে থাকলেও বৃহস্পতিবার রাতের সন্ত্রাসী ঘটনা ম্যারি লো পেনকে অবিশ্বাস্যভাবে সামনে নিয়ে এসেছে। লো পেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুসারি। ট্রাম্প নিজেও এক টুইট বার্তায় এ নির্বাচন নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করে বলেছেন, সম্ভবত পুলিশ হত্যার পর লি পেন বাড়তি সুবিধা পেয়ে যেতে পারেন।
নির্বাচনে চার কোটি ৭০ লাখ ভোটার, এরমধ্যে ১৫ লাখ বিদেশে। সন্ত্রাসে কাতর দেশটিতে জরুরি অবস্থার মধ্যেই নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ৫০ হাজার পুলিশ, সাত হাজার সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
মোট ১১ জন প্রার্থী ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে এদের মধ্যে মূল লড়াইটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মারি লো পেন, ইমানুয়েল ম্যাখঁ, জ্যঁ-লুক মিলনশঁ ও ফ্রাঁসোয়া ফিলোঁর মধ্যে। আজকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সবগুলো জনমত জরিপেই এই চারজন প্রার্থী পরিষ্কার ব্যবধানে এগিয়ে আছেন বলে দেখা গেছে, তবে এদের কেউই নিরঙ্কুশ জয় পাবেন না বলে জরিপে আভাস পাওয়া গেছে, খবর বিবিসির। সর্বশেষ জনমত জরিপগুলোর ফলাফলে প্রকাশ পেয়েছে, মারি লো পেন (৪৮) ও ইমানুয়েল মাখঁর (৩৯) মধ্যে রান-অফ ভোট হলে মাখঁর জয়ী হবেন, আর তা হলে ফ্রান্সের সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করবেন তিনি।
প্রথম দফার নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে কেউ যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট নিশ্চিত করতে না পারেন, তাহলে আগামী ৭ মে এ নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দফায় সর্বাধিক ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তখন।
জয়ী প্রার্থী আগামী ১৪ মে-র মধ্যে প্রেসিডেন্ট ওলাঁদের কাছ থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে এই প্রথম ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হননি। সমাজতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের জনপ্রিয়তা তলানিতে নেমে যাওয়াই এর কারণ।
(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/জেএস)