‘আর কত সহ্য করমু বলতে পারেন?’

আউয়াল খাঁন, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০১৭, ১৫:০৭ | প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০১৭, ১১:১৩

‘অনেক আশা করে এই এলাকায় একটা বাড়ি করসি। ভাবছিলাম পোলপান নিয়া একটু শান্তিতে থাকতে পারমু। গত কয়েক বছর ধইরা রাস্তা-ঘাটের যে অবস্থা দেখতাসি তাতে করে আর অফিসে যাইতে মন চায় না। আবার অফিসে গেলে বাড়িতে আইতে মন চায় না। বৃষ্টির মৌসুমও আইল, আর কত সহ্য করমু বলতে পারেন?’

অনেকটা বিরক্তি নিয়েই এসব কথা বলছিলেন মালিবাগের বাসিন্দা মিজবাহ উদ্দিন মিলন। তার এই বিরক্তির কারণ হিসেবে মৌচাক-মালিবাগের মূল সড়কের বেহাল অবস্থাকেই দায়ী করলেন তিনি। শুধু মিজবাহ সাহেবেই নন, তার মতো হাজারো মানুষ মালিবাগ ও মৌচাক এলাকায় প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গত কয়েক বছর ধরেই।

মগবাজার-মৌচাক উড়াল সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই শান্তিনগর থেকে মৌচাক হয়ে মালিবাগ রেলগেটের ডিআইটি রোড পর্যন্ত সড়কটি মেরামত করা হয়নি। মাঝে মধ্যে সামন্য কিছু পাথর রাস্তার গর্তগুলোতে ফেলা হয়। কিন্তু ভারি যান চলাচলের কারণে একটা সময় সেই পাথরগুলো ভেঙে গুড়ো হয়ে পানির সঙ্গে মিশে কাদায় পরিণত হয়। রাজধানীর অন্যান্য সড়কে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও মৌচাকের এই ছোট্ট অংশের সড়কে মেরামত করা হয়নি। সড়কগুলোতে উড়াল সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। একইসঙ্গে বিভিন্ন সময় গ্যাস, বিদ্যুৎ কিংবা ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজের জন্য একের পর এক খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। এতে করে ভারী যানবাহন চলাচলের এই সড়কটি ধীরে ধীরে ভাঙতে থাকে বড়সড় গর্ত হয়। ভাঙা সড়কে প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে হেলেদুলে চলছে পরিবহনগুলো।

শুষ্ক মৌসুমেই এই সড়কে ভোগান্তির শেষ নেই। এখন আবার বৃষ্টির দিন হওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে আরও কয়েকগুন।

পথচারীরা জানান, সড়কগুলোতে একই জায়গায় বারবার খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। আবার সেটি ভরাটও করা হয়। এই কাজে সরকারি বাজেট নষ্ট হচ্ছে। অথচ সামান্য কিছু অর্থ দিয়ে মৌচাক ও সংলগ্ন সড়কগুলো অন্তত ভাঙা অংশগুলো মেরামত করে দেয়া যেত। তাহলে সাধারণ মানুষ শুষ্ক বা বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তিতে পড়ত না।

বলাকা, আজমেরি, গ্লোরী, প্রভাতী বনশ্রী, তরঙ্গ প্লাসসহ বেশকয়েকটি পরিবহনের চালকের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। একজন চালক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘রাস্তা ভাঙা থাকলে এমনেই গাড়ি অনেক ঝাক্কি খায়। বৃষ্টি অথবা শুকনার দিনেও এই রাস্তায় যেমনে পানি জইমা থাকে তাতে আন্দাজে গাড়ি চালাই। গাড়ি যদি আস্তে টানি তাইলে বড় গাতায় (গর্ত) আটকায়ে যায়। ইঞ্জিন দুর্বল তাই গাড়ি উডাইতে সময় লাগে। আবার যদি গাড়ি জোরে টানি তাইলে অনেক ঝাক্কি লাগে। তহন যাত্রীরা আমাগো গালাগালি করে।’

মামুনুর রশিদ ও ইকবাল মাহমুদ নামের দুইজন মোটরসাইকেল আরোহী জানালেন, এই রাস্তায় সবসময় হাঁটু সমান পানি জমে থাকে। অনেকটা অন্ধের মতো গাড়ি চালাই। বৃষ্টিতে সড়কে পোশাক ও জুতা কোনোটাই ভালো থাকে না।’

রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ ও রামপুরা। যানজট নিরসনে এই এলাকাগুলো ঘিরে ২০১৩ সালে শুরু হয় উড়াল সেতুর নির্মাণকাজ। তিন বছরের মাথায় সাতরাস্তা থেকে রমনার হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল পর্যন্ত অংশ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। মোট আট দশমিক ৭০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই উড়াল সড়কটির একটি অংশ বাংলামোটর থেকে মৌচাক হয়ে শান্তিনগর এবং মৌচাক হয়ে রামপুরার দিকে যাবে আরেকটি অংশ।

২০১৫ সালের মধ্যে গোটা উড়াল সড়কের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও বারবার নকশা পরিবর্তনসহ নানা জটিলতায় কাজ এগিয়ে নিতে বিলম্ব হয়েছে। যার ফলে তিন দফায় সময় বাড়ানোর পর এখন ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু বাস্তবে কাজের গতি অনুযায়ী উড়াল সেতুর কাজ শেষ হতে আরও সময় লাগতে পারে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/এএকে/জেডএ )

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

কামরাঙ্গীরচর নাগরিক পরিষদ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মেয়র তাপসের মতবিনিময়

মতিঝিলের ফুটপাতে পড়েছিল বৃদ্ধার মরদেহ

মিরপুর বিআরটিএ’তে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ৪ দালালকে সাজা

খিলক্ষেতে ৬০ কোটি টাকার খাসজমি উদ্ধার

রাজারবাগের পুকুরে ডুবে পুলিশ সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যু, ধরা পড়ল সিসি ক্যামেরায়

চার নারী একসঙ্গে ওয়াশরুমে! সেই রাতে গুলশানে কী হয়েছিল, জানালেন ভুক্তভোগী

রাজধানীতে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নারীর আত্মহত্যা

সংসদ এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে আটক সাবেক এমপিপুত্র, ছাড়া পেলেন মুচলেকায়

গুলশানে ‘মাতাল’ হয়ে মারামারিতে জড়ানো তিন তরুণী গ্রেপ্তার, বারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

ভাষানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: মা ও স্ত্রীর পর না ফেরার দেশে লিটনও

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :