সংঘর্ষের মধ্যে বিজয়নগরে মন্ত্রী ছায়েদুল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের সফর ঠেকাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
নব-নির্মিত উপজেলা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রের উদ্বোধন করতে ছায়েদুল হকের আজ বিজয়নগর সফরে যাওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে দাওয়াত না দেয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ এই সফরের বিরোধিতা করে। তারা কর্মসূচি বর্জনের পাশাপাশি মন্ত্রীর সফর ঠেকাতে হরতালের ডাক দেয়।
এই পরিস্থিতিতে আজ রবিবার সকাল থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আর গোলযোগের আশঙ্কায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, বিজয়নগর, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয় দুই প্লাটুন বিজিবি, র্যা ব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং দেড় শতাধিক পুলিশ।
এর মধ্যেই দুপুরে কঠোর নিরাপত্তায় বিজয়নগর আসেন মন্ত্রী ছায়েদুল হক। তিনি চান্দুরা ডাকবাংলো এলাকায় পৌঁছলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করে। পুলিশ বাঁধা দিলে বাঁধে সংঘর্ষ।
বেলা ১২টার পর বিজয়নগরের চান্দুরা বাস স্ট্যান্ডে হরতাল আহ্বানকারী পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
এ সময় পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সময নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিযাজ আহমেদ আহত হন। পরে তাকে সরাইল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
পরে মন্ত্রী বিজয়নগর প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রে মত বিনিময় সভায় যোগ দেন। এ সময় তার বিরোধিতাকারীরা সমাবেশস্থলের বাইরে কাল পতাকা দেখায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এই ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।’
বৃহস্পতিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে মন্ত্রীর অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়। সেই দিনই রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করা হয়। এর মধ্যেই শুক্রবার মন্ত্রীর নামফলক ভাঙচুর ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনা ঘটে। শনিবার রাতে এনিয়ে ১২০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আওয়ামী লীগের দুই নেতার মধ্যে নাসিরনগরের সংসদ সদস্য মন্ত্রী ছায়েদুল হক এবং সদর আসনের উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর বিরোধের শুরু গত ইউপি নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে। পরে নাসিরনগর হামলায় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারকে দায়ী করেন মন্ত্রী। এরপর আরো স্পষ্ট হয় বিভক্তি।
এরপর আলাদাভাবে কাজ শুরু করেন ছায়েদুল-মোকতাদির। বেশকটি উপজেলা সফরে করেন মন্ত্রী। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার নবনির্মিত মৎস্য অফিস উদ্বোধনের পাশাপাশি সুধী সমাবেশের ডাক দেন ছায়েদুল হক। আর এসব কর্মসূচি প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে হরতাল ডাকেন মোকতাদির সমর্থকেরা।
ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি
মন্তব্য করুন