টঙ্গীতে সাঁড়াশি অভিযানে আটক ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০১৭, ২০:২৯ | প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০১৭, ২০:২৫

গাজীপুরের টঙ্গীর ১৫টি ওয়ার্ডে একযোগে জঙ্গি, মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী 'সাঁড়াশি অভিযান' পরিচালনা করেছে গাজীপুর জেলা পুলিশ। টঙ্গী থানার অন্তর্গত ১৫টি ওয়ার্ডকে ৬০ ভাগে বিভক্ত করে জেলা পুলিশের পাঁচ'শ পুলিশ সদস্য এ অভিযানে অংশ নেয়। প্রত্যেক ওয়ার্ডে একজন পরিদর্শক, একজন উপ-পরিদর্শক, একজন সহকারী উপ-পরিদর্শক সহ ২০ জন কনস্টেবল অভিযান পরিচালনা করেন। এছাড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপাররা সরেজমিনে এ অভিযান পর্যবেক্ষণ করেন। টঙ্গীতে পুলিশের এ অভিযানকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলা এ অভিযানে ‘জিহাদি’ বই, দেশীয় ছুরিসহ ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টঙ্গী মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার। আটকদের মধ্যে দুইজন নারীও রয়েছে বলে জানান ওসি। তবে অভিযানে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

রবিবার দুপুরে সাঁড়াশি অভিযানের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, রাজধানীর নিকটবর্তী এলাকা টঙ্গী একটি শিল্প এলাকা। প্রতিদিন টঙ্গী থেকে হাজার হাজার লোক রাজধানীতে প্রবেশ করে। রাজধানীর কাছের নগরী হওয়ায় অপরাধীরা টঙ্গীতে আশ্রয় নিয়ে থাকে। তাই পুলিশ সদস্যরা প্রতিটি বাড়িতে যাবে। বাড়িওয়ালাদের সহযোগিতায় ভাড়াটিয়াদের ফ্ল্যাট বা কক্ষে তল্লাশি চালানো হবে। যেসব বাড়িতে বাড়িওয়ালাদের পাওয়া যাবে না সেসব বাড়িতে পুলিশ সরাসরি প্রবেশ করবে। বাসা বাড়িগুলোতে কারা বাস করেন এবং তারা কী করেন বা কখন বাড়িতে আসেন ও যান এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।

এসপি বলেন, আমরা টঙ্গীর ১৫টি ওয়ার্ডকে ৬০ ভাগে ভাগ করে প্রত্যেকটি বাসা-বাড়িতে তল্লাশি করবো। এসব এলাকার অচেনা লোক যারা কোনো চাকরি করে না, সারাদিন বাসায় শুয়ে থাকে, বাড়িওয়ালা নেই এমন বাসা-বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

পুলিশ সুপার বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য একটাই টঙ্গীতে কোনো জঙ্গি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী আছে কি না তা খুঁজে বের করা। এ অভিযানের মাধ্যমে আমরা একটি ম্যাসেজ দিতে চাই, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী ও জঙ্গিদের সমাজে কোনো ঠাঁই নেই।

টঙ্গীতে বড় ধরনের জঙ্গি আস্তানা আছে এমন কোনো আশঙ্কা করছেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ বলেন, টঙ্গীতে এর আগে মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, এছাড়া পাতারটেকে বড় ধরনের জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। তাছাড়া গাজীপুরে ছয়টি জেলখানা ও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। তাই গাজীপুরকে জঙ্গি ও মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে আমাদের এই অভিযান।

পুলিশের এ অভিযানে স্থানীয় সাংসদ জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান খান কিরণসহ ১৫টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা সহায়তা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল শেখ, গোলাম সবুর, মো. সুলাইমান, সহকারী পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন, টঙ্গী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ তালুকদার, পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামান সহপুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার টঙ্গীর মসজিদগুলোতে জুমার নামাজের আগে মাইকে ঘোষণা দিয়ে আজকের এই অভিযানের কথা জানানো হয়। এ উপলক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। টঙ্গী থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জানান, অভিযানের সময় যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে বা পুলিশ সদস্যরা যাতে কোনো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন না হয় সেজন্যই সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতা নেয়া হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/আইআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :