‘গাউছুল আজম ছিলেন মুসলিম মিল্লাতের পরম হিতাকাঙ্ক্ষী’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ এপ্রিল ২০১৭, ১৭:৩১

চট্টগ্রাম রাউজান কাগতিয়া আলিয়া গাউছুল আজম দরবার শরিফে অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে ইবাদত-বন্দেগি ও জিকির-আজকারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়ে মেরাজুন্নবী (দ.) মাহফিল ও সালানা ওরছে হযরত গাউছুল আজম (রা.) উপলক্ষে ঈছালে ছাওয়াব মাহফিল। সোমবার রাতে এ অনুষ্ঠান পালিত হয়।

এদিন ফজরের নামাজের পর খতম শরিফ, মোরাকাবা, ঈছালে ছাওয়াব, রওজা জেয়ারত, মিলাদ-কিয়াম ও মোনাজাতের পর খতমে কোরআন ও বুখারী শরীফের মধ্য দিয়ে শুরু হয় গাউছুল আজম (রাঃ)’র ওরছের কর্মসূচি। কাগতিয়া দরবারের পক্ষ থেকে পূর্ব থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল ওরছে কারো কাছ থেকে গরু, মহিষ, ছাগল, টাকা, নজর-নেওয়াজ এ ধরনের কোন কিছু নেয়া হবে না। চলবে না শরীয়ত পরিপন্থী কোন কার্যকলাপ। শুধুমাত্র কোরআন-সুন্নাহর পূর্ণ অনুসরণে পালিত হবে যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী গাউছুল আজম (রাঃ)’র সালানা ওরছ। এ লক্ষ্যে দরবারের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছিল কোরআন-সুন্নাহ্র আলোকে একটানা দিন-রাত ব্যাপী নানা কর্মসূচি। আলোক সজ্জিত করা হয় রওজা পাক, মসজিদসহ পুরো দরবার শরীফ।

ভোর থেকেই টুপি ও তসবিহ হাতে কেউবা পায়ে হেঁটে, আবার কেউবা গাড়িযোগে দলে দলে কাগতিয়া দরবারে আসতে শুরু করে। ছোট শিশুরাও সমবেত হয়ে আল্লাহ আল্লাহ জিকির করতে থাকে। এ যেন এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। শুধু দেশের নয়, সপ্তাহজুড়ে বাংলাদেশে আসা বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মধ্যপ্রাচ্য, সৌদিআরব, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কাগতিয়া দরবারের শত শত অনুসারী এতে অংশ নেয়। জোহরের পূর্ব পর্যন্ত চলতে থাকে এ কার্যক্রম। বিদেশে অবস্থানরত এ মনীষীর অনুসারীরাও বাদ পড়েননি, তারা এদিন স্ব স্ব স্থানে বসে আর মহিলারা নিজেদের ঘরে বসে কোরআন তেলাওয়াত করতে থাকেন। জোহরের পর রওজা জেয়ারত শেষে শুরু হয় পবিত্র মেরাজুন্নবী (দঃ) ও গাউছুল আজম (রাঃ)’র জীবনী শীর্ষক আলোচনা। অশ্রুসিক্ত চোখে বক্তারা স্মৃতিচারণ করতে থাকেন আর শ্রোতারা অঝোরধারায় কান্নায় স্মরণ করতে থাকেন এ মনীষীর নানা স্মৃতি, নসিহত। অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, কালজয়ী মনীষী গাউছুল আজম (রাঃ)’র কথা মানুষ কখনো ভুলবে না। যিনি গত বছর ২৬ রজব মেরাজুন্নবী (দঃ)’র এ দিনে বরকতময় সময়ে সবাইকে শোকসাগরে ভাসিয়ে প্রিয়নবীর সাথে আল্লাহর দীদারে চলে যান। ইসলামের মহান খেদমতগার, সুন্নাতে মোস্তফার প্রচারক যুগশ্রেষ্ঠ এ মনীষী ছিলেন দেশ, জাতি ও মুসলিম মিল্লাতের পরম হিতাকাঙ্খী, অতি আপনজন ও অভিভাবক।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ ওলামা পরিষদের সভাপতি আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ ইব্রাহীম হানফি, সচিব আল্লামা মুফতি কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকি, উপাধ্যক্ষ আল্লামা জাফর আহমদ ছিদ্দিকি, মুহাদ্দিস আল্লামা মুহাম্মদ আশেকুর রহমান, আল্লামা মুহাম্মদ এমদাদুল হক মুনিরী, মাওলানা ফরিদ আহমদ ছিদ্দিকী, মাওলানা সেকান্দর আলী প্রমুখ।

মিলাদ, কিয়াম ও আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় সালানা ওরছে হযরত গাউছুল আজম (রাঃ)। এ সময় উপস্থিত সকলের কান্না ও আমিন আমিন ধ্বনিতে চারিদিকে এক শোকের পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মোনাজাতে মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ্র সমৃদ্ধি এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম (রাঃ) ফুয়ুজাত কামনা করেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫এপ্রিল/এমএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :