নেত্রকোণায় চার হাজার ৯শ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ

নেত্রকোণা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৬ এপ্রিল ২০১৭, ১৯:০৯

আগাম বন্যায় ফসলহানি নিয়ন্ত্রণে সরকার নেত্রকোণা জেলায় চার হাজার ৯শ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমান।

তিনি জানান, বুধবার এই বরাদ্দ আসার পরপরই তা বণ্টনের কাজও শুরু হয়েছে। বরাদ্দের এই সহায়তা আগামী একশ দিন প্রতি মাসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রতি ৩০ কেজি চাল ও নগদ পাঁচশ টাকা করে দেয়া হবে।

জেলা প্রশাসক জানান, জেলায় এক লাখ ৬৭ হাজার ১৮০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

নেত্রকোণায় আবাদ হওয়া এক লাখ ৮৪ হাজার ৩২০ হেক্টর জমির মধ্যে ৬৯ হাজার ৭১০ হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। মরে গেছে এক হাজার ১৮০ মেট্রিক টন মাছ। ইতোমধ্যে জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ৩৫৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২৫ লাখ টাকা ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে বলেন তিনি।

নেত্রকোণা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিলাস চন্দ্র পাল জানান, মঙ্গলবারের দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। নতুন করে আর বোরো ফসল তলানোর ঘটনা হয়নি। তবে আবার বৃষ্টি হলে ফসলহানির আশংকা থাকছেই বলেন তিনি।

ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চোখের সামনে কাঙ্ক্ষিত সোনার ফসল তলিয়ে নষ্ট হওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ তলিয়ে যাওয়া আধাপাকা ধান কাটছেন। যতটুকুই পাওয়া যায় এই আশায়। আবার বেশিরভাগ কৃষকই এক ছটাক ধানও ঘরে তুলতে পারেননি। অনেকেই ডুবন্ত কাচা ধান কেটে আনছেন গো-খাদ্যের জন্যে।

জেলার হাওর উপজেলা মদনের কাইটাইল ইউনিয়নের বাড়রী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবুল আজাদ। তিনি বলেন, বাড়ির সামনে হাওরে এবার নিজের দুই একর জমিতে আবাদ করেছিলেন ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধান। এই জমিতে একটিই বোরো ফসল হয়। পরে বোরো মওসুমে সেখানে পানি থাকে। এ কারণে রোপা আমন আবাদ করা যায় না। এই একটা ফসল চলে গেল পানিতে। আশা করেছিলাম, ২শ মণের মত ধান পাব। এক ছটাক ধানও ঘরে তুলতে পারিনি। সারাবছর খাব কি। সংসার চালাব কেমনে। আবাদের সময় কিছু ঋণ করেছিলাম। এই টাকাই কেমনে শোধ করব।

জেলার কেন্দুয়া-মদন সড়কের পাশে কেন্দুয়া উপজেলা গোগ গ্রামের কৃষক রহিছ উদ্দিন। তিনি বলেন, আড়াই একরের মত জমিতে আবাদ করেছিলেন। ৪০ থেকে ৫০ শতকের মত জমির আধাপাকা ধান পানির নিচ থেকে কেটে আনার চেষ্টা করছি। সামান্য ধান পাচ্ছি। দশ ভাগের এক ভাগও পাব না। গরুর জন্যে কাচা ধান কটে আনছি। গরুগুলোকে কেমনে বাঁচাব।

তলিয়ে যাওয়া কাচা ধান কাটছিলেন মদন উপজেলার জয়পাশা গ্রামের কৃষক ইমান আলী। তিনি বলছিলেন, গরুর জন্যে এই কাঁচা ধান কাটছি। কিছু আধা পাকাধানও কেটেছি। তাতে এক মাসের খাবারও হবে না। একই রকম কথা বললেন, উপজেলার হাজরাগাতি ও কেশজানি গ্রামের একাধিক কৃষক।

কথা বলার সময় প্রায় সব কৃষকই জানিয়েছেন, তারা এখন নাগাদ সরকারি কোন সহায়তা পাননি।

সর্বত্র ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোসহ ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম হলে কি পদক্ষেপ জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, অনেক লোকবল কাজ করছে। জেলার ক্ষতিগ্রস্ত কোন এলাকা ত্রাণ সহায়তা থেকে বাদ যাবে না। বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করেছি। আর ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম হলে সরকার জিরো টরারেন্স দেখাবে। অনিয়মকারী যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেন জেলা প্রশাসক।

(ঢাকাটাইমস/২৬এপ্রিল/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

গাইবান্ধায় জমি নিয়ে বিরোধে লাঠির আঘাতে একজনের মৃত্যু

৫০০ কোটি টাকা হাতানোর চেষ্টা প্রতারক চক্রের, এনএসআই ও পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার ৯

বিল বকেয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন, অবৈধ বিদ্যুতে চলছে ইউপি কার্যালয়

কেজি দরে অপরিপক্ব তরমুজ, পিস চাইলে দাম আকাশ ছোঁয়া

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতার চোখ উপড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

ফেনী সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের গণইফতারে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১০

মধ্যরাতে ফের মিয়ানমারের গুলির শব্দে কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত

উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক, দুর্ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি

বরগুনা প্রেসক্লাবের নামে ভুয়া কমিটি গঠনের অভিযোগ 

ঝিনাইদহে বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ৩ প্রতিষ্ঠানে জরিমানা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :