২৯ এপ্রিলের স্মৃতি আজও কাঁদায় উপকূলবাসীকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০১৭, ০৯:৫৮ | প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল ২০১৭, ০৯:৫৫
ঝূর্ণিঝড়ের পর নিহতদের লাশ এভাবেই পানিতে ভাসতে থাকে

ভয়াল ২৯ এপ্রিল আজ। উপকূলের স্বজনহারা পরিবারে কান্নার দিন। ১৯৯১ সালের এই দিনে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় দেড় লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারায়। সরকারি হিসেবে প্রাণহানির সংখ্যা এক লাখ ৩৮ হাজার বলা হলেও বাস্তবে সেই সংখ্যাটা ছিল দুই লাখেরও বেশি। নিহতের সংখ্যা বিচারে পৃথিবীর ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল এটি। প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া সেদিনের ঘূর্ণিঝড়ের থাবায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে কোটিরও বেশি মানুষ।

২৬ বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াল স্মৃতি এখনো তাড়া করে সেদিনের ঝড়ে বেঁচে যাওয়া মানুষদের। ওই দিনটের কথা মনে করলে এখনো অনেকে আঁতকে ওঠেন। ভয়াল ওই ঘটনা এখনও দুঃস্বপ্নের মতো তাড়িয়ে বেড়ায় উপকূলবাসীকে। জলোচ্ছ্বাস আর ঘূর্ণিঝড়ের কথা মনে হলে গভীর রাতে ঘুম ভেঙে যায় উপকূলবাসীর। ঘটনার এতো বছর পরও নিহতদের লাশ, স্বজন হারানোদের আর্তচিৎকার আর বিলাপের স্মৃতি মুছে ফেলতে পারছেন না তারা।

সেদিনের স্মৃতিচারণ করে আতিক মোল্লা বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরদিন উপকূলজুড়ে ছিল শুধু লাশ আর লাশ। শুধু মানুষ নয়, গরু-ছাগল-মহিষ আর মানুষের মৃতদেহে একাকার হয়ে গিয়েছিল সেদিন। কোনও রকম ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া মানুষ ও পশু মাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল।

প্রতি বছরের মতো এবারও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করবে।

এ উপলক্ষে শনিবার কোস্টাল জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ এবং ২৯ এপ্রিল স্মৃতি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল মিলনায়তনে সংবাদ সন্মেলন এবং নিহতদের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। সন্দ্বীপ সাংবাদিক কমিউনিটি ঢাকা ও দিবসটি পালনে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টি ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ৬ মিটার (২০ ফুট ) উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয় এবং এতে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এদের বেশিরভাগই নিহত হয় চট্টগ্রাম জেলার উপকূল ও দ্বীপসমূহে।

সন্দ্বীপ, মহেশখালী, হাতিয়া দ্বীপে নিহতের সংখ্যা সর্বাধিক। শুধু সন্দ্বীপেই মারা যায় প্রায় ২৩ হাজার লোক। ধারণা করা হয়, এই ঘুর্ণিঝড়ের কারণে প্রায় ১ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। সাগর ও নদীর উপকূল প্লাবিত হয়। কর্ণফুলি নদীর তীরে কংক্রিটের বাঁধ থাকলেও এটি জলোচ্ছ্বাসে ধ্বংস হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের ১০০ টন ওজনের একটি ক্রেন ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে স্থানচ্যুত হয় এবং আঘাতের কারণে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।

বন্দরে নোঙর করা বিভিন্ন ছোট বড় জাহাজ, লঞ্চ ও অন্যান্য জলযান নিখোঁজ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার মধ্যে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অনেক যানও ছিল।

এছাড়া প্রায় ১০ লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ২৯ এপ্রিল রাতে এটি চট্টগ্রামের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে, যা ক্যাটাগরি-৪ ঘূর্ণিঝড়ের সমতুল্য।

ঢাকাটাইমস/২৯এপ্রিল/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :