‘নারীদের কারাতে শেখা উচিত’
মাসুম পারভেজ রুবেল। এক সময়ের অ্যাকশন হিরো হিসেবে বাংলা চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় একটি নাম। রুবেল মাত্র ২২ বছর বয়সে পরপর দুইবার ১৯৮২ ও ১৯৮৩ সালে জাতীয় কারাতে চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণ পদক লাভ করেন। ২৬ বছর বয়সে ১৯৮৬ সালে "লড়াকু" চলচ্চিত্রে অভিনয় করার মধ্যে দিয়ে চলচ্চিত্রে নাম লেখান। প্রথম ছবিতেই বাংলাদেশের দর্শকদের বাজিমাৎ করে দেন তার মার্শাল আর্টের কলাকৌশল দেখিয়ে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সেই রুবেলকে এক ঝলক দেখা গেলো রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের মাঠে। সেখানে তিনি প্রতি শুক্রবার কারাতে শেখান। গত ৩০ বছর ধরেই তিনি এমন প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। প্রতিদিন বিকালে রুবেল এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সেখানে রোজ প্রায় ১০০ জন ছেলে-মেয়েকে কারাতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
এ নিয়ে রুবেল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে কারাতে শিখেছি। প্রতিটি বাবা মা তার সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সুস্থ সবল ও স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। তাই বাবা মায়েরা তাদের সন্তানদের এখানে কারাতে প্রশিক্ষণে ভর্তি করান। কিন্তু আরো অনেক স্টুডেন্ট এখানে থাকা উচিত ছিল। সেই হিসেবে অনেক কম। তারপরও আমি খুশি তাদেরকে শেখাতে পেরে। মেয়েদেরকে সবসময়ই কারাতে শেখা উচিত। আগের চেয়ে আমার এখানে অনেক বেশি মেয়েরা কারাতে শিখতে আসে। তবে এই ধরনের কাজে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। কোন ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই আমি ৩০ বছর ধরে এই কারাতে স্কুল চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতি শুক্রবার আমি এখানে কারাতে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। যারা কারাতে প্রশিক্ষণ পাবেন তাদেরকে কোটা ভিত্তিক চাকরিতেও সুযোগ দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি। তাহলে একটি সুস্থ সবল ও স্বাবলম্বী জাতি হিসেবে আমরা গড়ে উঠতে পারবো।’
রুবেল আরো বলেন, ‘আমি এখানে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বেসিক কারাতে শেখাই। নিজেদের আত্মবিশ্বাস তৈরিতে কারাতের কোন বিকল্প নেই। এটি মূলত তিব্বত থেকে চাইনিজ কোরিয়ানদের মাধ্যমে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে ।আগের চেয়ে নারীরা অনেক বেশি কারাতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, তবে আমি চাই আরো বেশি বেশি তারা কারাতে শিখুক।’
প্রসঙ্গত, ৩ মে ১৯৬০ সালে রুবেল বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। বয়সের ভারে অনেক নায়ক হারিয়ে গেলেও তিনি এখনো তার তারুণ্য ধরে রেখেছেন। এখনো অভিনয় করে যাচ্ছেন। সামনেই তার চার-পাঁচটি চলচ্চিত্র প্রকাশ হবে। তিনি এখন বিধ্বস্থ, ধ্বংস মানব, বীর বাঙ্গালী, অপরাধ জগত নামে চারটি চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করছেন। এই বছরেই দুটি ছবি মুক্তি পাবে। এমনটাই জানান এই ব্লাকবেল্টধারী কারাতে মাস্টার।
মাসুম পারভেজ রুবেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সময় বড় ভাই মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা’র প্রযোজিত ও শহিদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘লড়াকু’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আগমন করেন । এ পর্যন্ত তিনি প্রায় তিনশ অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৯এপ্রিল/এমইউ/জেড)