ঢাকাটাইমসকে সাক্ষাৎকার
খোকনকে শিডিউল না দেয়ায় নিষিদ্ধ হলাম: শাকিব
একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত চলচ্চিত্র অভিনেতা শাকিব খানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি। শাকিবের দাবি তিনি যা বলেছেন, তা বর্তমান চলচ্চিত্রশিল্পেরই বাস্তব ছবি। কিন্তু পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন ব্যক্তিগত ক্ল্যাশ থেকে পরিচালক সমিতিকে ব্যবহার করেছেন। খোকন চান না চলচ্চিত্র শিল্প ভালো হোক, তরুণরা জায়গা পাক। দেশের চলচ্চিত্রশিল্প যেখানে ধুঁকছে, যেখানে একটার পর একটা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সেখানে পরিচালক সমিতি কীভাবে একটি চলচ্চিত্রের শুটিং বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়? দেশের চলচ্চিত্রের প্রতি তাদের ভালোবাসার পরিবর্তে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থই কি প্রকট হয়ে উঠছে না?
পরিচালক সমিতি চলচ্চিত্র থেকে শাকিব খানকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকাটাইমসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এমনই প্রশ্ন তোলেন দেশের চলচ্চিত্রের সেরা তারকা। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মাহমুদ উল্লাহ।
[সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে শাকিব বলেন, চলচ্চিত্রে এখন কাজ কমে গেছে। এফডিসিতে সবাই আসে আড্ডা দিতে। এই যে এত এত পরিচালক, তারা কজন কাজ করেন? এরপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন পরিচালক সমিতির মহাসচিব। তারা শাকিবকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাইতে সাত দিনের সময় দিয়ে ২৪ এপ্রিল চিঠি পাঠায়। সাত দিন পেরোনোর দুই দিন আগে ২৯ এপ্রিল শাকিবকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়]
আপনাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুটিং বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এখন কী করবেন?
হ্যাঁ। ২৫০ জনের একটি ইউনিট প্যাক আপ হয়ে গেল। প্রযোজক যে এত ক্ষতির সম্মুখীন হলেন তার কী হবে? এর দায়ভার কে নেবেন? খোকন কি নিবেন? এগুলো সবই চক্রান্ত। এগুলো সবই পূর্বপরিকল্পনা। ব্যক্তিগত ক্ল্যাশগুলো একটি অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে মেটানো হচ্ছে। খোকনের কোনো এখতিয়ার নেই কাউকে নিষিদ্ধ করার।
আপনাকে সাত দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল? আপনি কি এর জবাব দিতেন?
অবশ্যই এর জবাব দিতাম। তারা আমাকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে, সেখানে সাত দিন সময় ছিল। কিন্তু তা পার হওয়ার আগেই তারা এ ধরনের ব্যবস্থা নিল।
শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তো দেশের চলচ্চিত্রেরই ক্ষতি হলো।
হ্যাঁ, আমরা বাধ্য হলাম ‘রংবাজ’ ছবির শুটিং প্যাকআপ করতে। এটা কেমন কথা! শুটিংটা তো করতে দিতে পারত। একটি শুটিং প্যাক যে কত ক্ষতি তা খোকনরাও তো ভালো জানেন। এতে তো আমাদের চলচ্চিত্রই পিছিয়ে পড়ল। তাহলে এটা কি চলচ্চিত্রের স্বার্থে হলো, না চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে হলো? চলচ্চিত্রের প্রতি তাদের ভালোবাসা কতটুকু এতে পরিষ্কার হয়েছে।
একে আপনার বিরুদ্ধে চক্রান্ত বলে মনে করছেন?
অবশ্যই। এ রকম হলে নতুন ভালো পরিচালক কি এই দেশে আর তৈরি হবে? তাদের সাপোর্ট না দিয়ে তাদের অসহযোগিতা কেন? এতে চলচ্চিত্রের কী স্বার্থ হাসিল হচ্ছে? রনি (রংবাজের পরিচালক শামীম আহমেদ রনি, তাকেও নিষিদ্ধ করেছে পরিচালক সমিতি) দুবার চিঠি পাঠিয়েছে, সমিতি থেকে বলা হয়েছে চিঠি শুক্রবার এক্সেপ্ট করবে। কিন্তু তা করা হয়নি। কেন? তাহলে তরুণদের এভাবেই পিছিয়ে রাখা হবে? এটা কি তাহলে চক্রান্ত নয়?
শুটিংয়ে যখন ছিলেন তখন কেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল?
শুটিং একটু হয়। একটু পরপর ফোন দেয়া হয় শুটিং বন্ধ করার জন্য। এটা লজ্জাজনক। এসব কারণে নতুনরা এই দেশে কাজ করতে পারবে না। তারা কেন এই ইন্ডাস্ট্রিতে এসে কাজ করবে? নতুনরা শঙ্কিত হয়ে পড়ছে।
আপনি কি আপনার মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করবেন?
কেন করব? আমি কি মিথ্যা বলেছি? যা বলেছি সত্য বলেছি। দেশের চলচ্চিত্রের অবস্থা কি এখন ভালো বলবেন? দেশে কি সত্যিই অনেক কাজ হচ্ছে? না, কাজ অনেক কম হচ্ছে। সেখানে একটি কাজ আবার এমনভাবে বন্ধ করা হয়। তাহলে এই শিল্প কীভাবে টিকে থাকবে। সত্য কখনো চাপা থাকে না। যারা ক্রাইম করে তারাই সত্যকে ভয় পায়। তারাই সত্য শুনলে নারাজ হয়।
এর আগে খোকনের সঙ্গে আপনার কী হয়েছিল?
সে আমার কাছে শিডিউল চেয়েছিল, আমি দেইনি। আমি কাকে শিডিউল দেব, আর কাকে দেব না এটা আমার ব্যাপার। কেউ বাধ্য করতে পারবে না। কিন্তু খোকনকে শিডিউল না দেয়ার কারণে আজকে সে ব্যক্তিগত ক্ল্যাশের কারণে একটি অ্যাসোসিয়েশনকে ব্যবহার করছে। সবাইকে প্রভাবিত করছে।
সবাই আপনার বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে- এটা কীভাবে দেখছেন?
না, আমার পক্ষেও অনেক রয়েছেন। নায়ক বাপ্পারাজ ও নায়ক ফারুক, কাজী হায়াৎ- সবাই ইন্ডাস্ট্রির ভেতরের খবর জানেন। তারা আমার পক্ষে কথাও বলেছেন। তারা তো সত্যি কথা বলেছেন। কেউ এখানে ভালো করলে সবাই তার পা ধরে টেনে নামানোর চেষ্টা করে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকে ও ঢাকাটাইমসকেও অনেক ধন্যবাদ।
(ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/মোআ)
মন্তব্য করুন