বচসার জেরে মুম্বাই ছাড়লেন এমান
পাঁচশো কেজি ওজনের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ভারী মহিলা বলে পরিচিতি পাওয়া মিশরের এমান আবদ এল আতিকে চিকিৎসার জন্য মুম্বাই থেকে এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমানের চিকিৎসক তার মঙ্গল কামনা করেন এবং তাকে ‘মিস’ করবেন বলে এক টুইট বার্তায় জানান।
মূলত ভারতের মুম্বাইয়ের সাইফি হাসপাতালে মিশরীয় নাগরিক এমানের চিকিৎসার ফলে তার ওজন কমেছে কিনা, তা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে এমানের বোনের এক বিবাদ তৈরি হবার কারণেই এই হাসপাতাল পরিবর্তন।
সাইফি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সেখানে এমানের ওজন কমানোর জন্য অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে এবং তার ফলে তার ওজন এখন ১৭২ কেজি। সুতরাং তিনি এখন হাসপাতাল ছেড়ে যেতে পারেন।
কিন্তু এমানের বোন শায়মা সেলিম বলেন, চিকিৎসকরা 'মিথ্যে বলছেন' এবং তার মুম্বাইতেই থাকা প্রয়োজন।
সাইফি হাসপাতালের চিকিৎসক মুফি লাকড়াওয়ালা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আবুধাবিতে ফিজিওথেরাপি ও স্নায়ুর কিছু চিকিৎসা চলবে এমানের। কয়েকদিন আগেই এমানের বোন সাইমা সেলিম দাবি করেন, মুম্বাইয়ের হাসপাতালে এমানের ওজন কমেনি। তাই তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে না। এমানের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা বেরিয়াট্রিক সার্জেন মুফজ্জল লকড়াওয়ালার দিকে আঙুল তুলে সাইমা বলেন, ‘চিকিৎসকদের সমস্ত দাবি মিথ্যা।’
সাইফি হাসপাতাল বলছে, তারা তাদের চিকিৎসার জন্য গর্বিত। এমানকে মালবাহী বিমান চার্টার করে আনা হয়েছিল, কারণ সাধারণ বিমানে তাকে ঢোকানো সম্ভব ছিল না। কিন্তু তিনি ফিরে যাচ্ছেন সাধারণ যাত্রীবাহী বিমানের, বিজনেস ক্লাসে।
এমানের বোন শায়মা বলেন তার বোন সুস্থ নন, তাকে সব সময় অক্সিজেন মুখোশ পরে থাকতে হয়, নল দিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। এই বিবাদের ফলে এখন এমানকে মুম্বাইয়ের হাসপাতালটি ছেড়ে যেতে হচ্ছে। তাকে আবুধাবির বুরজিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
ক্ষুব্ধ চিকিৎসকেরা বলে দেন, হাসপাতালে আরও কিছু দিন থাকার সুযোগ পেতেই এমন অভিযোগ করছেন সাইমা। তারা জানান, এমানের ওজন কমেছে ৩০০ কেজিরও বেশি। ক্ষুধা কমাতে পাকস্থলীও ছোট করা হয়েছে।
জানুয়ারি মাসে মিশর থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় এমানকে মুম্বাই আনা হয়েছিল। চিকিৎসক লাকড়াওয়ালার নেতৃত্বে একটি দল অপারেশন করে এমানের পাকস্থলীর আকার ছোট করে দেন, যাতে ক্ষুধা ও খাবারের পরিমাণ কমিয়ে তার ওজন কমানো যায়।
সাইমার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার বিকালে এমানকে মুখে পানি পানের অভিযোগ তুলেছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ জানায়, এমানের মুখে কোন খাবার দেয়া যাবে না। তাকে শুধুমাত্র নলের মাধ্যমে খাবার দেয়া যাবে, এটি জানা সত্ত্বেও তাকে মুখে পানি দিয়েছেন সাইমা। শুধু তাই নয়, তিনি হাসপাতালের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন এবং নার্সদের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় কথা বলেছেন।
ঘটনার তদন্তে হাসপাতালে পুলিশ আসে এবং পুলিশ জানায়, তদন্ত চলছে আশা করি সব ভালো হবে।
সাইমার অনুরোধে গত বুধবার এমানকে দেখতে মুম্বাই আসেন আবুধাবির হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি দল। সাইফি হাসপাতালের দাবি, সেই যোগাযোগটা করিয়ে দিয়েছিলেন শল্যচিকিৎসক লকড়াওয়ালাই। বেরিয়াট্রিক সার্জারির সেকশন চিফ বলেন, ‘অস্ত্রোপচার সফল। এমানের অবস্থা স্থিতিশীল। আমাদের চিকিৎসকরা দারুণ কাজ করেছেন। তবে অন্যান্য জটিলতা থাকায় এখনই বাড়ি ফিরতে পারবেন না এমান।’
(ঢাকাটাইমস/১মে/জেএস)