ঠাকুরগাঁওয়ে ব্লাস্টের মহামারি, দিশেহারা কৃষক

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ মে ২০১৭, ১২:২৭

ঠাকুরগাঁওয়ে বোরো ধান ক্ষেতে ব্লাস্টের আক্রমণ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে শত শত বিঘা জমির ধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না চাষিরা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া, রাজাগাঁও ও আকচা ফাঁড়াবাড়ি এলাকায় বোরো ধানের শীষ বের হওয়া শুরু করেছে। বিশেষ করে বিআর ২৮ জাতের ধানে এ রোগ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আপাত দৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে, গাছে ধান পেকে গেছে। শীষ হয়ে গেছে সাদা। কিন্তু শীষে আসলে ধান নেই। সাদা ধানের শীষে চালের পরিবর্তে মিলছে পাতান।

এসব এলাকার মাঠের পর মাঠ ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে মহামারি।

ঘনিমহেশপুর গ্রামের বোরো চাষী শহিদুল ইসলাম ও আমজাদ আলী ঢাকাটাইমসকে জানান, ধানের শীষ বের হওয়ার ৫/৭ দিনের মাথায় ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ক্ষেতের জমি। এতে জমির ধান শীষ শুকিয়ে পেকে যাওয়ার রঙ ধারণ করছে।

এ রোগ আক্রান্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জমির ধান শুকিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় চাষিরা পড়েছে মহাবিপাকে। যেসব চাষি অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে, ব্যাংক কিংবা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ধান চাষ করেছেন, বাকিতে দোকান থেকে সার বিষ ও কীটনাশক বিষ কিনে জমিতে প্রয়োগ করেছেন তারা পড়েছেন বিপাকে।

একই গ্রামের ইউসুফ আলী জানান, তিনি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপন করেন। ইতোমধ্যে সমস্ত জমির ধান ব্লাস্টের আক্রমণে সাদা হয়ে গেছে। তিনি জানান, কিভাবে দোকানের ধার ও ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন এ নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।

কৃষকরা জানান, ধার বাকি পরিশোধের জন্য এবার কঠোর পরিশ্রম আর পরিচর্যা করেন ধান ক্ষেতে। ধানের গাছপালাও ভালো হয়। কিন্তু শীষ বের হওয়ার পর পরই ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে জমির ধান নষ্ট হওয়ায় চাষিরা বিপাকে পড়েছেন।

কৃষক রেজাউল ইসলাম জানান, রোগ নিরূপণ ও কীটনাশক প্রয়োগের আগেই জমির ধান সাবাড় হয়ে যাচ্ছে। বিষ প্রয়োগ করেও এ রোগ থেকে প্রতিকার মিলছে না বলে।

এ ঘটনায় সাধারণ চাষিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আর আতঙ্ক ঠেকাতে কৃষি বিভাগ এলাকায় মাইকিং করে কৃষকদের সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিসুর রহমান ঢাকাটাইমসকে জানান, আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবের কারণে এখানে বোরো ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় চাষিদের ছত্রাক নাশক বিষ সপ্তাহে কমপক্ষে দুইবার প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও আরও ব্যাপক প্রচারের জন্য ইতিমধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ বেতার ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক প্রচারের জন্য এক প্রেস রিলিজ পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে আক্রান্ত এলাকায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দিনদিন আবহাওয়া ভালো হলে এ রোগের ব্যাপকতা কমে আসবে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৫৯ হাজার ৯৭৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪১ হাজার ২১১ মে. টন চাল।

(ঢাকাটাইমস/০১মে/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :