‘বাবা-মেয়ের আত্মহত্যার দায় কেউ এড়াতে পারে না’

প্রকাশ | ০১ মে ২০১৭, ২৩:৩৮ | আপডেট: ০১ মে ২০১৭, ২৩:৪৮

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

গাজীপুরের শ্রীপুরে ‘সুবিচার’ না পেয়ে আত্মাহুতি দেয়া বাবা-মেয়ের দায় পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

সোমবার সকালে তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন। এসময় স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে শ্রীপুর থানায় দায়ের করা মামলার ব্যাপারে পুলিশের সাথে কথা বলেন কাজী রিয়াজুল হক। পরে তিনি মামলার বাদী হযরত আলীর স্ত্রীর সাথে কথা বলেন এবং তার খোঁজ খবর নেন।  

জাতীয় মানবাধিকার চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, এক ধরনের স্বার্থান্বেসী মহল যারা জমিটি দীর্ঘদিন দখলের চেষ্টা করেছিল, যারা তার মেয়েকে লাঞ্ছিত করেছে তারা এ আত্মহত্যার ঘটনার জন্য দায়ী। সেই সাথে আমাদের যাদের সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্ব ছিল, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেনি। ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় তারা যে সালিশ করতে চেয়েছে, তা তাদের আওতার মধ্যে আসে না। তাই জনপ্রতিনিধিরা এ দায়িত্ব এড়াতে পারে না। পুলিশ প্রশাসনও ঘটনার পর কোনো অ্যাকশনে যায়নি। তারাও দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারে না। এজন্য আমি মনে করি,  এখানে যে অবহেলা হয়েছে, তা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ফৌজদারী অপরাধ।

এসময় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের সাথে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাহেনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সবুর খানসহ পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী নিহত হযরত আলীর স্ত্রীর অভিযোগ, তার শিশু মেয়ে স্কুলে গিয়েও বখাটের হাত থেকে নিস্তার পায়নি, প্রতিপক্ষের লোকজন গরু নিয়ে গেছে। এসব কারণেই তার স্বামী সন্তানসহ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন।

এদিকে অভিযুক্ত আবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ঘটনাটির তদন্ত করা হচ্ছে জানিয়ে পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেছেন, এটি আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় পুলিশের গাফলতি আছে কিনা তা তদন্ত করতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সবুর খানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ দিকে কমলাপুর জিআরপি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত আবুল হোসেনকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

শনিবার সকালে শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণপাশে তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন কর্ণপুর ভিটিপাড়া গ্রামের কৃষক হযরত আলী ও তার মেয়ে আয়েশা। এ ঘটনায় জিআরপি থানায় মামলা হয়েছে। রবিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে সন্ধ্যায় তাদের বাড়ির পাশে দাফন করা হয়। 

(ঢাকাটাইমস/০১মে/প্রতিনিধি/ইএস