‘সাহসী’ শারমিনের এসএসসির ‘বাধা’ জয়
ঝালকাঠির রাজাপুরের শারমিন আকতার এখন দুনিয়া জোড়াই পরিচিত নাম তার সাহসী নারী পুরস্কার জেতার কারণে। তার প্রায় সব কর্মকা-ই এর পর থেকে আগ্রহ জাগাচ্ছে অন্যদের। শারমিনের এসএসসি পরীক্ষা পাসও এক বড় খবর।
চলতি বছর রাজাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন শারমিন। আর পরীক্ষা দেয়ার পরই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের 'ইন্টারন্যাশনাল ইউমেন অব কারেজ-' পুরস্কারে ভূষিত হন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে সে পুরস্কার নিয়েও এসেছেন তিনি।
জীবনের ওপর ঝড়-ঝাপটা কম যায়নি এতটকুু শারমিনের ওপর। সে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেও তিনি ৪. ৩২ স্কোর করে এসএসসি পাস করেছেন। এত নির্যাতনের মুখেও 'এ' গ্রেড পাওয়া শারমিনের নাম আবার ছড়িয়েছে মুখে মুখে।
শিক্ষকরা বলছেন, ঝড়-ঝাপাটার মধ্যেও জীবন সংগ্রামী মেয়েটির এই ফলাফল প্রশংসনীয়। তাই তাকে নিয়ে গর্ব করছে সহপাঠী আর এলাকাবাসী সবাই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল জানতে নিজের স্কুলে এলে শারমিনকে নিয়ে হৈচৈ পড়ে যায়। শারমিন জানান, মায়ের বিরুদ্ধে মামলা না করলে তার পরীক্ষাই দেয়া হত না। অনেক চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে এ ফলাফলেই তিনি সন্তুষ্ট।এখন থেকে আরও ভালভাবে পড়াশুনা করে আগামীতে একজন আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন শারমিন। বলেন, ‘এই পেশায় গিয়ে দেশ ও দেশের নির্যাতিত নারী পাশে দাড়ানোই হবে তার একমাত্র ব্রত’।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের আগস্টের শুরুর দিকে ৩২ বছরের এক পাত্রের সঙ্গে ১৫ বছরের শারমিনের বিয়ে ঠিক করেন তার মা। বাল্য বিয়েতে রাজি না হওয়ায় খুলনায় নিয়ে তাকে পাত্রের সঙ্গে এক ঘরে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে আসেন শারমিন।
পালিয়ে রাজাপুরে আসার পরও মা আর সেই যুবকের নির্যাতন সহ্য করতে হয় এই কিশোরীকে। শেষে এক সহপাঠীর সহযোগিতায় রাজাপুর থানায় তার মা এবং ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করেন শারমিন। এনিয়ে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে খবর প্রচারের পর বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।
অসীম সাহসিকতা ও অদম্য ইচ্ছার স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের 'ইন্টারন্যাশনাল ইউমেন অব কারেজ' পুরস্কারে ভূষিত হন শারমিন আকতার। গত ৩০ মার্চ মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের কাছ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট নেন তিনি।
ঢাকাটাইমস/০৪মে/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি
মন্তব্য করুন