রোগে অস্বাভাবিক মোটা হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাখন

প্রকাশ | ০৫ মে ২০১৭, ১২:১৯

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কিশোর বয়সে সমাজের অন্য পাঁচ-দশটা ছেলের মত ভালই ছিলেন। পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে পড়াশোনার গণ্ডি বেশিদূর এগোয়নি। ছোটখাটো ব্যবসা করে পরিবারকে সাহায্য করতে হতো তাকে। ২০০৩ সালে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন। এরপর আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে শরীরের ওজন। ওজন কমাতে অনেক ডাক্তার দেখালে মেলেনি সুফল। ফলে ওজন বেড়ে এখন ২৫০ কেজিতে পৌঁছেছে। অস্বাভাবিক ওজন বাড়ায় হাঁটাচলায় কষ্ট হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের মৌড়াইল গ্রামের বাসিন্দা মাখন মিয়ার। ৩৮ বছর বয়সী মাখন এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক।

মাখনের বাবা মিলন মিয়া জানান, ছোট বেলাতে এমন ছিলেন না মাখন। ২০-২২ বছর বয়স থেকে তাঁর ওজন বাড়তে থাকে। ওজন কমানের জন্য মাটি কাটার মতো পরিশ্রমের কাজে লাগানো হয়। কিন্তু তাতেও ফল আসেনি।

মাখন মিয়া জানান, ২০০১ সাল থেকে তিনি মোটা হতে শুরু করেন। তখন ওজন কমানোর জন্য তিনি ভারী কাজ বেছে নেন ও প্রতিনিয়ত ব্যয়াম করতেন। কিন্তু এতেও কাজ হচ্ছিল না। ২০১০ সালের দিকে ওজন ১৫০ কেজি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। ঢাকায় গিয়ে বেশ কয়েকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে ওষুধ খেয়েছেন। কিন্তু এখনো ওজন বেড়েই চলছে।

তিনি বলেন, রুটি খেলে পেটে সমস্যা হওয়ায় তিন বেলা নরম ভাত খান তিনি। এছাড়া অন্যান্য স্বাভাবিক খাবারও খান সাধারণ মানুষের চেয়ে একটু বেশি। ভারী শরীরের কারণে এখন তিনি কোনো কাজই করতে পারেন না। এমনকি প্রকৃতির কাজ সারা, বিছানায় শুয়ে থাকাও তার জন্য অনেক কষ্টের হয়ে দাঁড়িয়েছে। আত্মীয়-স্বজনরা তার খাবারের খরচ বহন করছেন।

মাখন মিয়া বিয়ে করেন ২০০৩ সালে। তাঁর বড় ছেলে মো. রাব্বি নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ও মেয়ে নাভা সাহেরা গফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। চার ভাই, তিন বোনের সংসারে তিনিই সবার বড়।

মাখন মিয়া জানান, আমি আমার জীবন যুদ্ধে এখন অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েছি। এখন আমার ওজন ২৫০ কেজির ওপরে। এখন যতই দিন যাচ্ছে আমি একেবারে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। এত ওজন নিয়ে আমি আর চলতে পারছিনা। ঢাকায় অনেক ডাক্তার দেখালে তারা বাংলাদেশে এই রোগের চিকিৎসা নেই বলে জানান। এজন্য চিকিৎসকরা বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

মাখন মিয়া জানান, আমি এতটাকা কোথায় থেকে পাব। যেখানে বউ বাচ্চা নিয়ে আমি সংসারের খরচ চালাতে পারছিনা সেখানে চিকিৎসার খবর চালাবো কেমনে। এজন্য উন্নত চিকিৎসার খরচ দিতে সরকার ও বিওবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

তার সাহাযার্থে অর্থ সংগ্রহের জন্য তার স্ত্রী লুৎফা বেগমের নামে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখায় নতুন একাউন্ড নম্বর খোলা হয়েছে। যার নং ০২০০০০৯৬৪২৮২০। মাখন মিয়ার মোবাইল ফোন নম্বর ০১৭৬০৩১১৯৬১।

ঢাকাটাইমস/৫মে/প্রতিনিধি/এমআর