পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেল বিউটি
জন্ম থেকে দুটো হাতই নেই তার। কিন্তু তাতে কী? বিউটি থেমে থাকার মতো মেয়ে নয়। লেখাপড়া যে তাকে শিখতেই হবে। ভালোভাবে লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হতেই হবে।
এমন ইস্পাত কঠিন মনোবল, অদম্য উৎসাহ, প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর একনিষ্ঠতা যার, তার কাছে প্রতিবন্ধিতা কোনো বাধাই হতে পারে না, কেউ পারে না তাকে দমিয়ে রাখতে। সে কথাই প্রমাণ করল জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শিবপুর গ্রামের মেয়ে উপজেলার আকলাশ শিবপুর-শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী শারীরিক প্রতিবন্ধী বিউটি আকতার।
এবারের এসএসসি পরীক্ষায় হাত না থাকায় পা দিয়ে লিখে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিউটি আকতার জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
জন্ম থেকেই তার দুই হাত নেই। তবু প্রবল আগ্রহে বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় সে। এক এক করে অতিক্রম করেছে প্রথম থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাস। নিজে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও হাত আছে এমন অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় শামিল হয়ে প্রতিটি পরীক্ষায় সাফল্য লাভ করেছে। এ বছর ক্ষেতলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এসএসসিতে অংশগ্রহণ করেও সাফল্য পেয়েছে মেধাবী বিউটি আকতার।
প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েও প্রতিটি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য অর্জন করেছিল সে। শুধু তাই নয়, সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিও লাভ করেছিল।
বিউটি আকতার উপজেলার শিবপুর গ্রামের হতদরিদ্র বর্গাচাষী বায়েজীদ হোসেনের মেয়ে। সংসারের অভাবের কারণে এক সময় বায়েজীদ হোসেন ভ্যান চালাতো। তার এ অভাবের সংসারে দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে বিউটি আকতার ছোট।
লেখাপড়ার প্রতি অদম্য ইচ্ছা থেকে বিউটি আকতার তার স্বপ্নপূরণে এগিয়ে চলেছে। লেখাপড়া শেষ করে বিউটি আকতার একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চায়।
এ ব্যাপারে বিউটি আকতারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষেতলালের আকলাশ শিবপুর-শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকামদ্দিন ঢাকাটাইমসকে জানান, বিউটি আকতারের মধ্যে লেখাপড়ার প্রতি তার প্রবল ইচ্ছা শক্তি লক্ষ্য করেছি। সে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকত। সে নিজেকে কখনো প্রতিবন্ধী মনে করত না। প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সহযোগিতা পেলে বিউটি আকতারের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন নিশ্চয়ই পূরণ হবে।
(ঢাকাটাইমস/০৫মে/প্রতিনিধি/জেবি)