ডাক্তারের অভাবে তালতলী হাসপাতাল বন্ধ

প্রকাশ | ০৬ মে ২০১৭, ০৮:৫১ | আপডেট: ০৬ মে ২০১৭, ১০:০৭

নাঈমুল হাসান রাসেল, বরগুনা

উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকরা থাকতে চান না-গত কয়েক বছর ধরেই এমন প্রবণতার খবর আসছে গণমাধ্যমে। এর মধ্যে বরগুনার তালতলীতে যে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি এলাকাবাসীকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। ডাক্তারের অভাবে হাসপাতালটিতে সেবাই বন্ধ হয়ে গেছে।

উপজেলার আড়াই লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র অবলম্বন ২০ শয্যার এই হাসপাতালটি। তবে প্রতিষ্ঠানটি তৈরির উদ্দেশ্যই ভেস্তে যেতে বসেছে চিকিৎসকদের অবহেলা আর দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে।

২০০৬ সালে প্রেষণে ডাক্তারসহ ১৭ জন স্টাফ এনে হাসপাতালটি চালু করা হয়। কিন্তু দুই মাস পর স্টাফ নার্সদের প্রেষণ বাতিল হলে তারা ফিরে যান। ফলে বন্ধ হয়ে যায় স্বাস্থ্যসেবা। এরপর বড়বগী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কমিউনিটি অফিসার মং ফোকে দিয়ে কোন রকম দায়সারা চালু রাখা হয়েছিলো বহির্বিভাগ। এক বছর আগে তিনিও চলে যান। বর্তমানে এ হাসপাতালে নেই কোন ডাক্তার, নেই ওষুধও। এ অবস্থায় চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে তালতলী উপজেলাবাসী।

উপজেলা হাসপাতাল হিসেবে এখানে নয় জন ডাক্তার থাকার কথা।  থাকলেও বর্তমানে নেই কোন ডাক্তার।  তালতলীর উপজেলার দিয়ে হাসপাতালের বহিঃবিভাগ কোনো রকম চালু রাখলেও গত এক বছর পূর্বে চলে গেছেন তিনিও।

এই হাসপাতালে ডাক্তার না থাকার কারণে এবং হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রতিদিন শত শত রোগীকে উত্তাল পায়রা নদী পাড়ি দিয়ে বরগুনা বা পাশের আমতলী, পটুয়াখালী এবং বরিশাল গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে হয়। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বাড়ি বসেই মৃত্যুর প্রহর গুনতে হয় অনেকেরই।

তালতলী হাসপাতালের পাশের স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল গফুর বলেন, ‘বাড়ির পাশে হাসপাতাল থাকতেও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত আমরা। এটা অনেক হতাশার। বেদনারও। উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দা বলে আমার এখনো চিকৎসা সেবায় এখনো অবহেলিতই রয়ে গেলাম।’

আরেক স্থানীয় বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে হাসপাতালটি এখন পুরোপুরি বন্ধ। এর কারনে সামান্য সর্দি -জ্বরে আক্রান্ত হলেও এখানের বাসিন্দাদের চিকিৎসার জন্য পারি দিতে হয় দীর্ঘ পথ। এটা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না।’

হাসপাতালটির এই করুণ অবস্থার বিষয়ে জানতে বরগুনার সিভিল সার্জন জসিম উদ্দীন হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তালতলী উপজেলা হাসপাতালটি চালু করার জন্য একাধিকবার আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।’

হাসপাতালটি চালু করতে চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও দাবি করেন সিভিল সার্জন। তবে এই উদ্যোগ কবে নাগাদ সফল হতে পারে বা আদৌ হবে কি না-সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দিতে পারেননি এই চিকিৎসা কর্মকর্তা।

ঢাকাটাইমস/০৬মে/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি