বেনাপোলে আটকে আছেন কয়েক হাজার যাত্রী

মহসিন মিলন, বেনাপোল (যশোর)
 | প্রকাশিত : ০৬ মে ২০১৭, ১৭:৪৮
ফাইল ছবি

ভারতের পেট্রাপোল পুলিশ ইমিগ্রেশনের ধীরগতির কারণে বেনাপোল চেকপোস্ট নোম্যান্সল্যান্ডে কয়েক হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী আটকা পড়েছেন।

ধীরগতির কারণে বেনাপোল চেকপোস্ট নোমান্সল্যান্ডে শনিবার সকালে কয়েক কিলোমিটার লম্বা লাইন পড়েছে যাত্রীদের। রোদ বৃষ্টিতে ভিজে পুড়ে সীমাহীন দুর্ভোগের পড়েছেন যাত্রীরা। শিশু, মহিলা, রোগী ও বৃদ্ধ যাত্রীদের কষ্টের সীমা নেই।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বলছেন, সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শুক্রবার ও শনিবার এখানে যাত্রীর চাপ একটু বেশি থাকে। শুক্রবার প্রায় ৬ হাজার ও শনিবার ৫ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারত যাওয়ার জন্য জড়ো হলে এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে লোকবল বাড়ানোর কথা বলা হলেও তারা কর্ণপাত করছে না।

ভারতের পেট্রাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী যাতায়াতে ইমিগ্রেশনের অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

বেনাপোল চেকপোস্টে কিছুসংখ্যক পুলিশকর্মী যাত্রীদের জিম্মি করে হয়রানি করে থাকেন বলে অভিযোগ। ভারত থেকে আসার পথে ও ভারতে ঢোকার মুখে তারা যাত্রীদের পাসপোর্ট ইমিগ্রেশনের কাজ করিয়ে দেয়ার কথা বলে, অনেক ক্ষেত্রে ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন। অথচ এসব যাত্রী ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্টের কাজ সম্পন্ন করতে কোনো টাকা লাগার কথা না।

এসব অব্যবস্থাপনার কারণে কিছুদিন আগে ইমিগ্রেশন ওসিকে ক্লোজ করা হয়। কিন্তু নতুন ওসি যোগদান করার পরও কনস্টেবলদের তৎপরতা বন্ধ হয়নি বলে যাত্রীরা অভিযোগ করছেন।

অপরদিকে ওপারে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রী হয়রানি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সেখানে যাত্রীদের নানাভাবে প্রশ্ন করে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। ভারতীয় হাইকমিশন ভিসা সহজীকরণ করলেও পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের কতিপয় কর্মকর্তার আচরণে সে সুবিধা ভেস্তে যেতে বসেছে। তারা যাত্রীদের সঙ্গে ‘তুই-তুকারি’ পর্যন্ত করছেন বলে অভিযোগ আসছে।

মারপিটের শিকারও হচ্ছেন বাংলাদেশি নাগরিকরা। প্রতিবাদ করলেই পাসপোর্টে লাল সিল মেরে দেয়ার হুমকি দেন তারা। এই সিল মেরে দিলে আর ভিসা মিলবে না বলে হুমকি দেয়া হয়।

শুক্রবার দুপুরে বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় ইমিগ্রেশন কাস্টমস পার হয়ে নোম্যান্সল্যান্ডে চক্রাকৃতির দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন শত শত যাত্রী। ওই লাইন বেনাপোল কাস্টম ও ইমিগ্রেশনের ভবনের সামনে প্রধান সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। প্রখর রোদে আকাশ থেকে যেন আগুনের হলকা নামছে। এ অবস্থায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে উঠছেন ভারত গমনেচ্ছুরা। তাদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ।

ভারতগামী যাত্রী ময়মনসিংহের ইশতিয়াক আহমেদ, মাগুরার তানসিল আহমেদ, লিপিরানি প্রমুখ জানান, তারা সকাল ১০টায় বেনাপোল ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু কখন পার হতে পারবেন, তা অনিশ্চিত। কিছু কিছু লোক ধীরগতিতে ভারতীয় চেকপোস্টে ঢোকাচ্ছে মূল গেটে থাকা ভারতীয় পুলিশ।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর শরীফ বলেন, সরকারি ছুটি থাকায় শুক্রবার ও শনিবার যাত্রীর চাপ অন্য দিনের তুলনায় একটু বেশি। আমরা দ্রুত যাত্রীদের কাজ সম্পন্ন করে দিচ্ছি কিন্ত ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের ধীরগতির কারণে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। আমরা তাদেরকে দ্রুত কাজ করার জন্য অনুরোধ করেছি।

(ঢাকাটাইমস/৬মে/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :