ইন্দুরকানিতে ‘চণ্ডিপুর গণহত্যা’ দিবস পালিত, স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি

সৈয়দ মাহ্ফুজ রহমান, পিরোজপুর থেকে
 | প্রকাশিত : ০৬ মে ২০১৭, ২২:৫৭

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ৬ মে পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে ‘চণ্ডিপুর গণহত্যা’ দিবস পালিত হয়েছে।

শনিবার ইন্দুরকানী ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলার সীমানাবর্তী বলেশ্বর নদের পশ্চিম তীরে দিবস উৎযাপন কমিটির উদ্যোগে শহীদদের স্মৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ, র‌্যালি, শহীদ স্মরণে আলোচনা সভা, মেলা ও কীর্ত্তণ অনুষ্ঠিত হয়।

বিভিন্ন এলাকা থেকে সহস্রাধীক জনতা গণহত্যা দিবস পালন অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

১৯৭১ সালের এই দিনে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার দুই কিলোমিটার দূরত্বে বলেশ্বর নদীর তীরে হিন্দু অধ্যুষিত পূর্ব চন্ডিপুর এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনী সশস্ত্র হামলা করে কবি, সাহিত্যিক, ইঞ্জিনিয়ার, নাট্যকার, শিক্ষকসহ শতাধিক লোককে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়াও প্রায় ৪৬৫টি ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। সেই ধ্বংসযজ্ঞ আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি এলাকাবাসী। এই দিনটি পালনের জন্য পূর্ব চন্ডিপুরের বিপিন চাঁদ ও দেবেন চাঁদ তিরোধান দিবস উপলক্ষে মন্দিরের শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে নিজ উদ্যোগে ছোট একটি শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করেছেন। অথচ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পার হলেও গণহত্যার স্থানে আজও নির্মাণ করা হয়নি কোন স্মৃতি সৌধ। সরকারি উদ্যোগে কোন স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

গণহত্যা দিবস পালন কমিটির সভাপতি বাবু সুনীল কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, ১৯৭১ সালের ৬ মে সকাল ৮ টায় পিরোজপুর থেকে সশস্ত্র পাক বাহিনী পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামে হামলা চালিয়ে সাধু দেবেন্দ্র নাথ হালদার, শিক্ষক দীনেশ মজুমদার, সতীষ চন্দ্র মন্ডল, নির্মল চন্দ্র, নাট্যকার ধীরেন্দ্র নাথ, উপেন্দ্রনাথ, ইঞ্জিনিয়ার বিমল হালদার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নির্মল রায়সহ শতাধিক হিন্দুদের গুলি করে হত্যা করে। শুধু তাই নয়, এসময় হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় ৪৬৫ বসতঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত এই ধ্বংসযজ্ঞ চলে। তখন অনেকেই ভয়ে পালিয়ে উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নে আশ্রয় নেয়।

এলাকাবাসীর দাবি শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় গণহত্যা এলাকায় একটি স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করতে হবে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাথে প্রতি বছর ৬ মে এলাকার সকল শ্রেণি পেশার মানুষ এতে অংশ নেয়। এ দিবসটি ঘিরে হিন্দু ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে শ্রী শ্রী গুরু বিপিন চাঁদ মন্দির ও শহীদ স্মৃতি স্তম্ভটি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম শিল্পী সাংবাদিকদের জানান, গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা প্রয়োজন। স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস /০৬মে/প্রতিনিধি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :