মসজিদে ধর্ষণ: ঠাকুরগাঁওয়ের সেই ইমাম কারাগারে

প্রকাশ | ১০ মে ২০১৭, ১৬:২১ | আপডেট: ১০ মে ২০১৭, ১৮:৫০

বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও

মসজিদে ধর্ষণের ঘটনায় এলাকাবাসীর বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচির পালনের পর অবশেষে মামলা নিয়েছে পুলিশ। আর অভিযুক্ত ইমাম সাদ্দাম হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আর মসজিদ ভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমের চাকরি থেকে তাকে অব্যাহতিও দেয়া হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বালিয়া ইউনিয়নের খলিসাকুড়ি গ্রামের শিশু কিশোরদের ইসলামী শিক্ষা দিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে মটপাড়া হাজী এমারেতুল্লাহ জামে মসজিদে মসজিদভিত্তিক শিশু শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। আর একই গ্রামের আমির উদ্দীনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের আরবি শিক্ষা দান করে আসছিলেন। পাশাপাশি তিনি ইমামের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

স্থানীয় কিশোর ও কিশোরীরা প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে আটটা পর্যন্ত ওই মসজিদে আরবি শিক্ষা লাভ থাকে। গত ১০ এপ্রিল মামলার ভুক্তভোগীসহ বেশ কিছু কিশোর-কিশোরী মসজিদে পড়তে আসে। কিছুক্ষণ পড়ার পর সকাল পৌনে আটটায় ইমাম সাদ্দাম হোসেন অন্যান্যদের ছুটি দিয়ে এক শিক্ষার্থীকে মসজিদের ভেতরে ডেকে নিয়ে যান।

ইমাম সাদ্দাম হোসেন মসজিদের দরজা বন্ধ করে দিলে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মনে সন্দেহ জাগে। তারা মসজিদের জানালার ফাঁক দিয়ে ভেতরে ধর্ষণের ঘটনা দেখতে পায়। এর মধ্যে কেউ একজন মোবাইলে সেই ঘটনা ধারণ করে। সেই ভিডিও এলাকায় পরে ছড়িয়ে পড়ে।

কিন্তু মসজিদ কমিটি ওই ইমামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে টালবাহানা শুরু করে। এতে স্থানীয়রা বিক্ষুদ্ধ হয়ে পড়ে। ইমামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে গত ৬ মে তারা ভূল্লী বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ সময় বক্তব্য রাখেন বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী মুক্তি, সমাজসেবক নুরুল হক সরকার, নাজিম উদ্দিন, জাহেরুল ইসলাম প্রমুখ।

এ ঘটনার পর প্রশাসনের টনক নড়ে। আর শনিবার রাতে শিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক সাদ্দাম হোসেনকে আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সিরাজ উ দৌলা তাৎক্ষণিকভাবে আসামিকে গ্রেপ্তার করেন। রবিবার ইমাম সাদ্দাম হোসেনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এই মামলার তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে

ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান ঢাকাটাইমসকে, অভিযুক্ত ইমাম সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।’

এ ব্যাপারে জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আবুল কাশেম জানান, ‘ছাত্রীর যৌন হয়রানির অভিযোগে বালিয়া ইউনিয়নের হাজি এমারেতুল্লাহ কেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে এবং ওই কেন্দ্রের শিক্ষক সাদ্দাম হোসেনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

ঢাকাটাইমস/১০মে/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি