যৌতুক না পেয়ে স্ত্রী, শ্বশুর, শ্যালককে বেধড়ক পিটুনি

প্রকাশ | ১১ মে ২০১৭, ১৭:৫৬ | আপডেট: ১১ মে ২০১৭, ১৮:১১

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় যৌতুকের দাবি না মেটানোয় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এক গৃহবধূকে পিটিয়ে জখম করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই খবর পেয়ে গৃহবধূর বাবা ও ভাই ছুটে গেলে তাদেরকেও পেটানো হয়।

গত মঙ্গলবার কারণ্যপূর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে পারেন।

ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম রেশমা আক্তার। তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। 

জানা যায়, দুবছর আগে পাশের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের জয়কাইল গ্রামের রাসেল ফকিরের সাথে বিয়ে হয় রেশমার। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে রেশমার পরিবারকে নাজেহাল করে আসছিল রাসেলের পরিবার। এমন অভিযোগে ফরিদপুরের লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) অফিসে দেড় বছর আগে দরখাস্ত করেন রেশমা। ব্লাস্ট দুইপক্ষকে ডেকে তখন সমঝোতা করে দিলেও যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন বাড়তেই থাকে।

গত ৯ মে মঙ্গলবার রেশমাকে লাঠি-পেটা করে সংজ্ঞাহীন করে ফেলে তারা। এরপর মোবাইল ফোনে রেশমার বাবা ও ভাইদের ডেকে নেওয়া হয় ওই বাড়িতে। সেখানে রেশমার বাবা ও দুই ভাইকে মেরে রক্তাক্ত করে রাসেল ও তার পরিবারের লোকজন। এক পর্যায়ে গ্রামবাসী দিয়ে তাদের উদ্ধার করে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।

রেশমার ভাই জাহিদ সিকদার অভিযোগ করেন, ৯ মে তার বোনকে আনতে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছা মাত্র রাসেল ফকির ও তার বাবা আকন ফকিরসহ কয়েকজন লোক লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে তাদের আহত করেন। তাদের চিৎকারে গ্রামের লোকজন গিয়ে উদ্ধার করে তাদের একটি অটোরিকশায় করে ফরিদপুরে পাঠায়।

বৃহস্পতিবার ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার কল্যাণ কুমার সাহা জানান, গত মঙ্গলবার রেশমা ও তার পরিবারের আরো তিনজন সদস্য আহত অবস্থায় হাসপাতালে আসে। এদের মধ্যে রেশমা ও তার বাবা সেকেন সিকদার গুরুতর আহত হওয়ায় তাদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

ব্লাস্ট ফরিদপুরের অ্যাডভোকেসি অফিসার হাসিনা মমতাজ লাভলী বলেন, বিয়ের পর থেকেই দফায় দফায় স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করে আসছেন রেশমা। গত ৯ মে রেশমার আট মাসের শিশু কন্যা নুসরাতকে রেখে রেশমাকে নির্যাতন করে আহত অবস্থায় তাড়িয়ে দেয় তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা।

মমতাজ লাভলী বলেন, ‘বিষয়টি আমরা আমাদের আইনজীবীর মাধ্যমে ফরিদপুরের আদালতে মামলা করার জন্য পাঠিয়েছি। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নির্যাতনের শিকার রেশমা ও তাদের পরিবারের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে ব্লাস্ট।

এ বিষয়ে সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আমিনুল হক জানান, ঘটনাটি আমরা মৌখিকভাবে জেনেছি, তবে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১১মে/প্রতিনিধি/ইএস/ডব্লিউবি)