বনানী ধর্ষণ: ইনস্টাগ্রামে সাফাতের সঙ্গে গোয়েন্দা কর্মকর্তার ছবি
ঢাকার বনানীর একটি হোটেলে দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনারের কার্যালয় থেকে তোলা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। ধর্ষণের অভিযোগে বনানী থানায় মামলা হওয়ার তিনদিন আগে ছবিটি নাঈম আশরাফের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন।
ছবিটিতে দেখা যায় বনানী ধর্ষণ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সাফাত আহমেদ, দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফ এবং একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছেন যার সঙ্গে ছবিটি দেখেছেন তার নাম মাহফুজুল ইসলাম। তিনি আগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ছিলেন। তবে এখন তিনি জঙ্গিবিরোধী বিশেষ শাখা ট্রান্স ন্যাশনাল শাখায় বদলি হয়েছেন। তিনি বর্তমানে জাপান অবস্থান করছেন।
তবে ওই ছবিটি কবে তোলা হয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা। আর আসামিরাও সবই পলাতক।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ কমিশনার শেখ নাজমুল আলমের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি তার মুঠোফোনটি রিসিভ করেননি।
ঢাকার দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী গত ২৮ মার্চ রেইন ট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন বলে ৬ মে তাঁদের একজন বনানী থানায় মামলা করেছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওই রাতে সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়ে দুই জনকে ধর্ষণ করেন শাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ। ধর্ষণের দৃশ্য ধারণ করেন সাফাতের গাড়িচালক। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, ওই ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। লোকলজ্জার ভয়ে প্রথমে মুখ না খুললেও আরও বেশি হয়রানির ভয়ে তাঁরা থানায় যান।
আলোচিত এই মামলার পাঁচ আসামির কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। সাফাত ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।
সাফাত আহমেদ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনায় স্নাতক পাস করে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দিয়েছেন সম্প্রতি।
এই মামলার তিন নম্বর আসামি সাদমান সাকিফ ঘটনার দিন বিদেশে একটি আইটি ফেয়ারে অংশ নিয়ে দেশে ফেরেন। পরে সাফাতের অনুরোধে তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। নির্যাতনের শিকার অভিযোগকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তাঁর ছেলের বন্ধুত্ব দুই বছরের পুরোনো। সাদমানের মাধ্যমেই সাফাতের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়।
সাদমান সাকিফ রেগনাম গ্রুপের ব্যবস্থাপক। তাঁর বাবা মোহাম্মদ হোসেন জনি ওই গ্রুপের মালিক। রেগনাম গ্রুপের সিএনজি কনভারসন, টাইলস, আবাসন প্রতিষ্ঠান, কফি শপ ও রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
ধর্ষণ মামলার দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফ ইমেকার্স নামের একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম চালান। গায়ক অরিজিৎ সিংকে ঢাকায় নিয়ে এসে কনসার্টের আয়োজন করেছিলেন তিনি। ফেসবুকে ইমেকার্সের ওয়েবসাইটে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে নাঈম আশরাফের ছবি দেখা গেছে।
ঢাকাটাইমস/১০মে/এএ/ডব্লিউবি
মন্তব্য করুন