বোয়ালমারী গণহত্যা দিবস কাল
ফরিদপুরের বোয়ালমারী গণহত্যা দিবস ১৬ মে (রবিবার)। দিবসটি উপলক্ষে শহীদ স্মরণ কমিটি সকালে হাসামদিয়া শাহ জাফর টেকনিক্যাল কলেজ চত্বরে স্থাপিত শহীদ স্মৃতি মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
এতে অতিথি থাকবেন সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো.আবু জাফর।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৬ মে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর হাসামদিয়া এলাকায় ৩৩ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জ্বালিয়ে দেয়া হয় হাসামদিয়া বাজারসহ শতাধিক বাড়ি-ঘর। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও সেখানে সরকারি উদ্যোগে নির্মিত হয়নি কোন স্মৃতিস্তম্ভ, স্বীকৃতি পায়নি শহীদ পরিবারগুলো।
ফরিদপুরের তৎকালীন মুজিব বাহিনীর কমান্ডার সাবেক এমপি শাহ মো. আবু জাফর জানান, ১৬ মে ভোরে যশোর সেনানিবাস থেকে মেজর নেওয়াজের নেতৃত্বে তিন শতাধিক পাকিস্তানি হানাদার ঢুকে পড়ে ফরিদপুরে হাসামদিয়া গ্রামে। সেইদিন আমাকে হত্যা করতে এসে, না পেয়ে তারা কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে গ্রামে প্রবেশ করে। শুরু করে নির্বিচারে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারী ধর্ষণ।
তিনি জানান, স্থানীয় রাজাকার আলবদরদের সহায়তায় হানাদার বাহিনী হাসামদিয়া বাজার পুড়িয়ে দেয়। এরপর তারা হিন্দু অধ্যুষিত রাজাপুর রামনগর গ্রামে ঢুকে অর্ধশত নারীকে ধর্ষণ করে। এ সময় ওই এলাকার ৩৩ জন হিন্দু ধর্মের মানুষকে কুমার নদের পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এভাবেই তারা আশে-পাশে আরো পাঁচটি গ্রামে চালায় ধ্বংসযজ্ঞ।
নিহত শহীদ পরিবারের সদস্যরা জানান, ‘গ্রামে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এসে অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করে। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও কেন শহীদদের স্মরণে সরকারি উদ্যোগে স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলা হয়নি জানি না।
শাহ মো. আবু জাফর দাবি জানিয়ে বলেন, ‘এই গণহত্যায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা আজও পায়নি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি। আমরা ব্যক্তি উদ্যোগে দিবসটি পালন করলেও সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ নেয়া হয় না। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকাবস্থায় দুই হাজার করে টাকা দিয়েছিলেন। তার মৃত্যুর পর আর কেউ খোঁজ নেয়নি এদের।’
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওশন আরা পলি বলেন, ‘আমি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ৩৩ শহীদের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সুপারিশ করব।’
(ঢাকাটাইমস/১৫মে/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন