দলে আনা নেতার ফাঁসি, উল্লসিত এমপি বাবু

প্রকাশ | ১৭ মে ২০১৭, ১৭:০২

আমির ‍হুসাইন স্মিথ, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের আওয়ামী লীগের চার কর্মী হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল বাশার কাশু তিন বছর আগে ক্ষমতাসীন দলে এসেছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর হাত ধরেই। দলীয় কর্মী হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে দলে ভেড়ানোয় তখন সমালোচনায় পড়েছিলেন বাবু। এই মামলায় সেই কাশুসহ ২৩ জনের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর সংসদ সদস্য বাবু বলেছেন, তিনি উল্লসিত।

২০০২ সালে আড়াইহাজারে চার আওয়ামী লীগ কর্মী হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায় প্রকাশ হতে লেগে যায় ১৫ বছর। বুধবার নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জন দ্বিতীয় আদালতের বিচারক কামরুন্নাহার এই রায় ঘোষণা করেন। বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা আবুল বাশার কাশুসহ তিনি ২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন।

এই রায়ের পর ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর হাত ধরে কাশুর আওয়ামী লীগে আসার প্রসঙ্গটি আবার আলোচনায় আসে। সেদিন বাবুর পোশাকে সোনার নৌকার কোটপিন তুলে ও হাতে ফুলের তোড়া তুলে কাশু।

এই কাণ্ডের পৌনে তিন বছর ঘোষণা করা হয় রায়। আর এর প্রতিক্রিয়ায় সংসদ সদস্য বাবু বলেন, ‘ন্যায়বিচার পেয়েছি। আমি আনন্দিত উল্লাসিত। মানুষ হত্যা করে যে কেই পার পায় না- এই সরকারের শাসন আমলে তা আবার প্রমাণিত হলো।’

চার আওয়ামী লীগ কর্মী হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে দলে ভেড়ানো সংসদ সদস্য বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড যখন সংগঠিত হয় তখন আমি ছাত্ররাজনীতি করি বলে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের রোষানলে পড়ে জেলখানায় বন্দি ছিলাম। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তৎকালীন সদাসদি ইউনিয়নে সমাবেশ করে বলেছিলাম শেখ হাসিনার সরকার আসলে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে।’

বিএনপি থেকে কাশুর আওয়ামী লীগে যোগদান প্রসঙ্গে বাবু বলেন, ‘আড়াইহাজার উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বাররা বিএনপির ভুল রাজনীতির পরিহার করে আওয়ামী লীগের সঠিক রাজনীতি ও উন্নয়নের রাজনীতির পক্ষে কাজ করেছে। কিন্তু যারা বিএনপির আমলে খুন খারাবি করেছে, মানুষ হত্যা করেছে, তাদের বিচার বিচারের গতিতে চলেছে। অপরাধী যে দলই করুক তার বিচার হয়েছে। এই রায় প্রমাণ করেছে দেশে আইনের শাসন আছে, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।’

২০০২ সালের ১২ মার্চ সকাল সাড়ে আটটায় বিএনপি সরকারের আমলে আড়াইহাজার উপজেলার জালাকান্দি এলাকার বাড়ি থেকে বাবেক ও তার ফুফাতো ভাই বাদল, ওমর ফারুক ও কবীরকে তৎকালীন আড়াইহাজার থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল বাশার কাশু ও সাধারণ সম্পাদক জহির মেম্বারের নেতৃত্বে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। পরে লক্ষীবরদী গ্রামে নিয়ে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতরা সবাই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থক।

এই ঘটনায় নিহত বাবেকের বাবা আজগর আলী মেম্বার বাদী হয়ে তৎকালীন আড়াইহাজার বিএনপির সভাপতি আবুল বাশারকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শেষে ২০০২ সালে ২১ জনকে সাক্ষী করে ২৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালত অভিযোগপত্র দাখিল করে।

ঢাকাটাইমস/১৭মে/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি