অসহায় বৃদ্ধের ফোনটি নিয়ে গেল কে?

প্রকাশ | ১৭ মে ২০১৭, ১৮:৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

চোরের ধর্ম নেই এমন প্রবাদ সত্য হয়ে ধরা দিল চেয়েচিন্তে জীবন চালানো এক প্রবীণ মানুষের জীবনে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের সামনে ভিক্ষা করেন তিনি। নিজের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সঙ্গে রাখতেন কমদামী একটি মোবাইল ফোন। আর সেটিই চুরি হয়ে যায়।

বুধবার সকালের দিকে কে বা কারা প্রবীণ মানুষটির অতি প্রয়োজনীয় মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায়। মোবাইল খোয়ানোর শোকে অঝোরে কাঁদছিলেন ষাটোর্ধ এই ভিক্ষুক।

পেশাগত কাজে যাওয়ার সময় বৃদ্ধ মানুষটির কান্না দেখে চোখ আটকে যায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশের প্রতিবেদক মিরাজ হোসেন গাজীর। পরে গাড়ি থেকে নেমে তার কাছ বিস্তারিত জানার পর ভিক্ষুক লোকটি তার মেয়ে জামাইয়ের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।

পরে কাগজে টুকে রাখা নম্বর দিয়ে মেয়ে জামাইয়ের সঙ্গে কথা বললেও অপরপ্রান্ত তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।

মিরাজ হোসেন গাজী তার ফেসকুকে কান্নারত অবস্থায় বৃদ্ধের দুটি ছবি পোস্ট করার করেন।  তিনি লেখেন, ‘রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের সামনে। যাত্রী ছাউনিতে বসে কাঁদছিলেন এই মানুষটি। তিনি ভিক্ষা করে জীবন চালান। গাড়ি থামিয়ে কাছে গিয়ে জানলাম, তার একটি মোবাইল ফোন ছিল। কারা যেনো ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আমরা মানুষ এতোটাই খারাপ!’

মিরাজ লেখেন, ‘এক বৃদ্ধ ভিক্ষুকের ফোনের লোভও করতে হবে? পরে আমার ফোনে তার মেয়ে জামাইয়ের সাথে কথা বলে কাঁদছিলেন। সেখান থেকেও কোন শান্তনার কথা পাননি মানুষটি। অনেক সময়ই মনে হয় বার্ধক্য আসলেই অভিশাপ!!!’

ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে ঢাকাটাইমসকে মিরাজ হোসেন বলেন, ‘রেসিডেনসিয়াল কলেজের সামনে তামাকবিরোধী একটি মানবন্ধন কভার করতে যাচ্ছিলাম। কাছাকাছি যেতেই একজন বৃদ্ধ মানুষের কান্নার দৃশ্য দেখে গাড়ি থেকে নেমে কথা বলে জানতে পারলাম তার মোবাইলটা কে বা কারা চুরি করে নিয়ে গেছে। খুব খারাপ লাগলো। পরে সে কাগজে লেখা একটা রবি নম্বর দিয়ে জানালো এটা তার মেয়ে জামাইর নম্বর। একটু কথা বলতে চায়। পরে কথা বলার ব্যবস্থা করলেও অপরপ্রান্ত থেকে তেমন রেসপন্স পায়নি।’

‘এতে লোকটা আরো কান্না করতেছিলো। পরে আমি এবং ক্যামেরা পারসন জাহাঙ্গীর ভাই দুজনে কিছু আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে স্বান্তনা দিয়ে এসেছি’ বলেন মিরাজ।

মিরাজ বলেন, ‘একজন ভিক্ষুকের মোবাইল চুরি হবে এটা ভাবনায় ছিলো না। তবে আশপাশের দুই একজন বললো হয়তো নেশাখোর বা ছিনতাইকারীরা এই কাজটি করেছে।’

(ঢাকাটাইমস/১৭মে/বিইউ/ডব্লিউবি)