১৫ বছর ধরে শিকলবাঁধা রিপন মুক্তির জন্য ব্যাকুল
মাদারীপুরের কালকিনিতে প্রায় ১৫ বছর ধরে শিকলে বাঁধা মো. রিপন বেপারী নামের ব্যক্তির বন্দিদশা থেকে এখনো মুক্তি মেলেনি। গত কয়েকদিন ধরে তাকে নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তাতে করেও টনক নড়েনি সমাজের কোনো বিবেকবান মানুষের। রিপনের বন্দিদশা থেকে মুক্তি না পাওয়ার বুকফাটা চিৎকার পৌঁছেনি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তির কানে। অপরের ক্ষতি করবেন এমন আশঙ্কায় তাকে তার পরিবার পায়ে শিকলবন্দি করে রেখেছে বলে জানা যায়। এখন তিনি মুক্তি চান, চান সুন্দর একটি স্বাভাবিক জীবন। তবে কেউ শুনছে না তার এ আকুতি। তিনি কাউকে দেখেই বলতে থাকেন, আমাকে মুক্তি দিন।
শিকলে বাঁধা অবস্থায় রিপন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, তিনি প্রথমে সমাজের একজন ভালো মনের মানুষ ছিলেন। তার একটি সাজানো সংসার ছিল, যেখানে তার পুত্র মেহেদী হাসান ও স্ত্রী সালেহা বেগমকে নিয়ে চলছিল তার পরিপাটি জীবন। কিন্তু আট বছর বয়সে তার ছেলে মেহেদী হাসান দুরারোগ্য ব্যধিতে মারা যায়। অপরদিকে স্ত্রী সালেহা বেগম অন্য পুরুষের সাথে বিয়ে করে তাকে একা ফেলে চলে যান। এতে করে তিনি কিছুটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এরপর তাকে তার বাবা আবদুস কুট্টি বেপারী বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরে পায়ে শিকল বেঁধে বন্দী করে রাখেন। সেই থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় পার হয়ে যায় তার জীবনের ১৫টি বছর।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বন্দী রিপনের পিতা আবদুস কুট্টি বেপারী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে রিপন পাগল হয়ে যায়। রিপন যাতে করে অপরের কোনো ক্ষতি সাধন করতে না পারে এজন্য তাকে শিকলে বেঁধে একটি ঘরে বন্দী রাখা হয়েছে।’
মানবাধিকার কর্মী নেছারউদ্দিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘রিপনকে এভাবে আটকে রাখা সম্পূর্ণ অমানবিক। আমার মতে তাকে মুক্তি দেয়া উচিত।’
চিকিৎসক মৃণাল মজুমদার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘রিপন বেপারীকে আটকে না রেখে সঠিক চিকিৎসা সেবা দিলে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘রিপনের আটকের বিষয় আমি অবগত নই। তবে এ বিষয় কেউ রিপনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করলে তাকে পুলিশ দিয়ে উদ্ধার করা যেতে পারে।’
(ঢাকাটাইমস/১৯মে/প্রতিনিধি/জেবি)
মন্তব্য করুন