বীরঙ্গনার বাড়ি নির্মাণ কাজের উদ্বোধনে জামায়াত নেতা

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৭, ১৯:২২

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) রাজকুমারী রবিদাস ফুলমতির সরকারি বরাদ্দের বাড়ি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলেন জামায়াতের উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান মুন্সি। এ নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। 

মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বীরাঙ্গনা রাজকুমারী রবিদাস ফুলমতির জন্য সরকার একটি বাড়ি বরাদ্দ দেয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সাদুল্যাপুর উপজেলা শহরের উত্তরপাড়ায় বীরাঙ্গনা রবিদাস ফুলমতির বাড়ি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান মুন্সি। এসময় উপস্থিত ছিলেন- সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারিয়ার খাঁন বিপ্লব, প্রেসক্লাব সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান ফারুক, সাংবাদিক খোরশেদ আলম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী হেলালুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেছের আলী সরকার, ডেপুটি কমান্ডার নুরুন্নবী সরকার তারা, মুক্তিযোদ্ধা দেলওয়ার রহমান, মকবুলার রহমান মুকুল, ভূমি অফিস জামে মসজিদের ইমাম বেলাল হোসেন, নিসচার সদস্য সচিব তোফায়েল হোসেন জাকির, যুগ্ম আহবায়ক জাহিদ খাঁন প্রমুখ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়া খান বিপ্লব ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা খাতুন সাদুল্যাপুরের বাইরে থাকায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। বীরাঙ্গনা রবিদাস ফুলমতির বাড়ী উদ্বোধনকালে তাকে উপস্থিত থাকার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুরোধ করেছিলেন। তিনি সেখানে যাওয়ার পর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর মুন্সিকে দেখতে পান। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি ওই বাড়ির উদ্বোধন করেন।’

সাদুল্যাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা খাতুন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কর্মএলাকার বাইরে অবস্থান করায় তিনি উদ্বোধনকালে সেখানে থাকতে পারেননি। একজন মুক্তিযোদ্ধা তাকে ফোন করলে, তিনি সেই মুক্তিযোদ্ধাকে উদ্বোধন করার জন্য বলেন। পরে শুনতে পান উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর মুন্সি বীরাঙ্গনা রবিদাস ফুলমতির বাড়ি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।’ 

সাদুল্যাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান মুন্সি’র সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সাদুল্যাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেছের উদ্দিন সরকার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সাইদুর রহমান মুন্সি নিজে যদিও বিএনপির চেয়ারম্যান হিসেবে দাবি করেন, কিন্তু তিনি জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ত এটা আমাদের আগে থেকেই জানা। কিন্তু ফুলমতির বাড়িতে গিয়ে সাইদুর মুন্সিকে দেখে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ি। তাকে দিয়ে বীরাঙ্গনা রবিদাস ফুলমতির বাড়ির কাজের উদ্বোনের বিষয়টি লজ্জাকর- এটি আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারিনি।  বাস্তব পরিস্থিতির কারণে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা কিছুই বলতেও পারিনি।’ 

প্রসঙ্গত, জামায়াতে ইসলামীর ওয়েবসাইটে তাদের দল থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নামের তালিকায় সাইদুর মুন্সির নাম রয়েছে। সেখানে ৯ নম্বর সিরিয়ালে সাইদুর রহমান মুন্সিকে জামায়াত মনোনীত (চতুর্থ উপজেলা চেয়ারম্যান-২০১৪) হিসেবে বলা হয়।

যদিও সাইদুর রহমান লোক দেখানোর জন্য বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হয়েছিলেন।

সাইদুর রহমান মুন্সি সাদুল্যাপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারিয়ার খাঁন বিপ্লব হত্যাচেষ্টা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এছাড়া পলাশবাড়ি থানায় দায়ের হওয়া নাশকতার মামলার আসামিও সাইদুর রহমান। নাশকতার মামলায় তিনি জেলহাজতও খেটেছেন। সাইদুর রহমান মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হওয়ায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে উচ্চ আদালতের রায়ে তিনি চেয়ারম্যান পদে বহাল হন।

(ঢাকাটাইমস/১৯মে/প্রতিনিধি/এলএ)