রাজশাহীর বাজারে আম, দাম চড়া

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৭, ২০:৩০ | আপডেট: ১৯ মে ২০১৭, ২১:৪০

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

ঝড়-বাদলের বৈশাখ শেষ। এবার এলো জ্যৈষ্ঠ। এখন আসবে দাবদাহ। গরমে ধুঁকবে প্রকৃতি, ক্লান্ত হয়ে উঠবে মানুষ। আর ক্লান্তশ্রান্ত মানুষদের রসনা মেটাতে জ্যৈষ্ঠের প্রথম দিন থেকেই রাজশাহীর বাজারে এসেছে ফলের রাজা আম।

কয়েকদিন আগে বাজারে ভারতীয় আম এলেও মৌসুমে এবারই প্রথম উঠলো দেশি আম। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, খুব স্বল্প পরিমাণে বাজারে আসতে শুরু করেছে গোপালভোগ। মৌসুমের নতুন ফল, তাই দাম বেশি। কিন্তু পরিমাণে কম হলেও চড়া দামেই পছন্দের ফলটি কিনছেন ক্রেতারা।

রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজারে নিজের ফলের দোকানে সোমবারই প্রথম আম সাজিয়েছেন ব্যবসায়ী বকুল হোসেন। তিনি জানান, প্রতিকেজি গোপালভোগ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তিনি। আর কিছুদিন পর বিভিন্ন জাতের আম বেশি পরিমাণে উঠলে দাম কমবে বলে জানান তিনি।

ওই দোকানে আমের ক্রেতা মহররম আলী বলেন, বাজারে এসে পাকা আম দেখেই তিনি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু তার কাছে দাম একটু বেশিই মনে হচ্ছে। এরপরেও পরিবারের সদস্যদের মৌসুমের প্রথম আমের স্বাদ দিতে কম করে হলেও আম কিনছেন। আলাপ শেষে তিনি দুই কেজি আম কিনে নিয়ে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহের প্রথম থেকেই রাজশাহীর বাগানগুলোতে গোপালভোগ পাকতে শুরু করেছে। এখন সেগুলো পেড়ে বাজারে তুলছেন বাগান মালিকরা। সাহেববাজার ছাড়াও নগরীর শালবাগান ও লক্ষ্মীপুর বাজারে আম উঠেছে। পাইকারি আম বিক্রি হচ্ছে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারেও।

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত পাল জানান, কৃত্রিম উপায়ে আম পাকানো বন্ধে বিভিন্ন জাতের আম পাড়ার ক্ষেত্রে এবার বিভিন্ন তারিখ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় প্রতিটি উপজেলা প্রশাসন ঠিক করে দিয়েছে কোন আমটি কত তারিখের আগে পাড়া যাবে না। বিষয়টি দেখভালের জন্য প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কমিটিও করে দেয়া হয়েছে।

ম্যাজিস্ট্রেট জানান, এবার সব আগে গোপালভোগ জাতের আম পাড়ার সময় ছিল ১৫ মে। তবে গাছে আম পাকা শুরু করলে দুই-চার দিন আগেও চাষিরা আম পাড়তে পারবেন। গোপালভোগের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই গাছে গোপালভোগ পাকতে শুরু করায় চাষিরা তা পেড়ে বাজারে তুলতে শুরু করেছেন।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গত আট বছরের ব্যবধানে রাজশাহীতে আমের আবাদ বেড়েছে আট হাজার ৭২৯ হেক্টের জমিতে। আর উৎপাদন বেড়েছে এক লাখ ১২ হাজার ৬২৯ মেট্রিক টন। এ বছর রাজশাহীর ১৬ হাজার ৫৮৩ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে কৃষি বিভাগ। তবে এবার কালবৈশাখীতে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি বলছেন, এবার রাজশাহীর শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি গাছে মুকুল এসেছিল। গাছে গাছে পর্যাপ্ত গুটিও এসেছিল। তাই কালবৈশাখীতে অনেক আম ঝরে গেলেও উৎপাদনে কোনো ঘাটতি থাকবে না। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলেই আশা প্রকাশ করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৯মে/আরআর/জেবি)