জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে চলনবিলের লিচু

সাইফুল ইসলাম, নাটোর থেকে
 | প্রকাশিত : ২০ মে ২০১৭, ০৮:০৩

লিচুর জন্য এতটা বিখ্যাত না হলেও দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে চলনবিলের লিচু। এবার চলন বিলে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে এই অঞ্চলে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার লিচু কেনাবেচা হচ্ছে। এতে করে এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে চাঙা ভাব দেখা দিয়েছে। তাছাড়া অনেকেই আবার বাড়ির আঙিনায় লিচু বাগান করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে এখানকার লিচু।

এবার চলনবিলাঞ্চলে মোজাফফর পুলি, চায়না থ্রি ও বোম্বে জাতের লিচুর চাষ হয়েছে। অন্যদিকে সম্প্রতি কয়েক দফা ঝড় এবং বৃষ্টিপাত হওয়ায় গাছেই লিচু পচন ধরেছে। এতে শেষ পর্যন্ত চাষি এবং ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হতে পারে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, লিচু নিয়ে চলনবিলের কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাড়ির আঙিনা থেকে ঘর পর্যন্ত লিচু আর লিচু। তাছাড়া লিচু গাছ থেকে পেরে তা বাজারজাত করার জন্য নারীসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ এতে জড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আবার দিনমজুর হিসেবেও কাজ করছেন। আর লিচু নিয়ে গড়ে ওঠেছে বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ও খুচরা হাট-বাজার। তবে লিচু চাষিদের অভিযোগ কৃষি বিভাগ তাদের তেমন কোনো সহযোগিতা করেনি। যেটুকু উৎপাদন হয়েছে তা কৃষকদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে।

স্থানীয়রা জানায়, নাটোর জেলার মধ্যে গুরুদাসপুরের নাজিরপুর এবং সিংড়া উপজেলার চামারী, মহিষমারী, চককালিকাপুর, চকবলরামপুর, পাঙ্গাশিয়া, সোনাপুর, বাহাদুরপুর, শিবপুর, কলম এবং হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের আচলকোট, গুনাইখারা, শালিকা ও হাসিকাটিসহ আরও ৫-৬টি গ্রামে এবার লিচু চাষ হয়েছে। আর এই লিচুগুলো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিন ট্রাকভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে মৌসুমের জনপ্রিয় ফল হিসেবে দাম আকাশছোঁয়ায় ওঠেছে।

চলনবিলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ১০০ লিচু দুইশ থেকে আড়াইশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ক্রেতারাও মৌসুমের ফল হিসেবে হুমড়ি খেয়ে কিনছে।

চামারী মহিষমারী গ্রামের লিচু চাষি জোবায়ের হোসেন বলেন, আবহাওয়া খারাপ ও ঝড় বৃষ্টির কারণে লিচুর গায়ে স্পট পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চাষিরা। তিনি আরও বলেন, লিচু চাষ লাভজনক হওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকরা অল্প জায়গায় বাগান করে সহজে লাখপ্রতি হতে পারছে। তাছাড়া এই অঞ্চলটি লিচু চাষের জন্য অনুকূল হলেও প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে অনেকেই আবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ যদি লিচু চাষিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সহযোগিতা করে তাহলে আগামীতে দ্বিগুণ লিচু চাষ হবে।

চলনবিলাঞ্চলের লিচু ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ জানান, তারা ১৯৮৬ সাল থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে লিচুর বাগান ক্রয় করে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকেন। নিয়মিত কীটনাশক আর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় লিচু বাগানগগুলো থেকে তুলনামূলক লাভ কম হবে বলে জানান।

তারা আরও বলেন, এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও সেচ সমস্যার কারণে লিচু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষিরা। তাছাড়া দেশের কীটনাশক কোম্পানিগুলো ভগিজগি।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সিংড়ায় ১৭৫ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ জানান, উপজেলায় মোজাফফর পুলি ও বোম্বে জাতের লিচুর চাষ হয়েছে। কৃষকদের সব রকম ফল চাষে উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন সময় বালাইনাশক ঔষধ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২০মে/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :