টাকার অভাবে কলেজে ভর্তি হতে পারবেন না সোমা?

প্রকাশ | ২২ মে ২০১৭, ০৮:২৪ | আপডেট: ২২ মে ২০১৭, ০৮:২৫

শামীম কাদির, জয়পুরহাট

অদম্য মেধাবী জয়পুরহাটের সোমা। বাক প্রতিবন্ধী দিনমজুর বাবার আয়ে চলে পরিবার।  বিরুদ্ধ পরিবেশেও পড়াশোনায় দারুণ এই কিশোরী। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়ে এলাকায় এখন আলোচিত চরিত্র তিনি। স্বপ্ন দেখছেন, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন।

কিন্তু তার মত পরিবারের সদস্যদের পক্ষে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সিঁড়ি মাড়ানো কি সহজ? আর্থিক সংকটের কারণে এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করতে পারবেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ওই সময় স্কুল কমিটির সভাপতি নিজের পকেটের টাকায় সোমার ফরম ফিলাপের ব্যবস্থা করেছিল। এবার এইচএসসিতে ভর্তি হওয়া নিয়ে একই সমস্যায় পড়েছে সোমার পরিবার।

শামছুন নাহার সোমা ঢাকাটাইসকে বলেন, ‘আমার বগুড়ার সরকারি আযিযুল হক কলেজে ভর্তি হওয়ার বাসনা রয়েছে। আমার পরিবার তো বাহিরে লেখাপড়ার খরচা চালাতে পারবে না। মাকে বলেছি, মা বলেছে ফরম ফিলাপের টাকায় দিতে পারিনি। তোকে আবার বাহিরে লেখাপড়া করাব কীভাবে?’

সোমাদের গ্রামের বাড়ি গোপিনাথপুর ইউপির মহীতুড় গ্রামে। তার বাবা ছামছুল ইসলাম একজন বাক প্রতিবন্ধী।  

সোমাদের সহায় সম্পদ বলতে মাটির বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। বাবা দিনমজুর। তার আয়ে চলে পুরো সংসার।  এই অবস্থায় সোমার কলেজে ভর্তি ও বাহিরে থাকা-খাওয়ার টাকা জোগাড় দেওয়া তার পরিবারের পক্ষে অসম্ভব।

এসএসসিতে সহযোগিতা পেয়ে পাস করার পর ভাল ফল করার পরেও হাসি নেই পরিবারের লোকজনের মুখে। সোমার মা সেলিনা খাতুন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মেয়ে বাহিরের ভাল কলেজে ভর্তি হতে চায়। এত টাকা কোথায় পাব। গৃহস্ত একজন বাক প্রতিবন্ধী মানুষ সবাইকে বোঝাতে পারে না। আমি মেয়ে মানুষ বাইরে যেতে পারি না। মেয়েটির মেধা ভাল ভাল ফলও করে সে। টাকার অভাবে বাইরের ভাল কলেজে ভর্তি করাতে পারছি না ‘

গোপিনাথপুর ইউপির সদস্য ও মহীতুড় গ্রামের বাসিন্দা তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শামছুন নাহার সোমার বাবা বোবা মানুষ। দিনমজুরি করে সংসার চালায়। এক কাঠাও আবাদি জমি নেই। বাড়িটিই একমাত্র সম্বল। মেয়েটি ছোট থেকেই খুব মেধাবী।

কাশিড়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিপ্লব সাখিদার বলেন, মেয়েটি পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল।  মেয়েটি টাকার অভাবে ফরম ফিলাপ হচ্ছিল না। ঘটনার জানার পর নিজের টাকায় মেয়েটির ফরম ফিলাপ করেছিলাম। হৃদয়বান কেউ এগিয়ে আসলে হয়তো মেয়েটি ভালোভাবে পড়াশোনা করে আবারো ভালো ফলাফল করতে পারবে।

(ঢাকাটাইমস/২২মে/প্রতিনিধি/বিইউ)